ইয়ট হলো একটি বিলাসবহুল নৌযান, যা সাধারণত অবকাশ, বিনোদন ও সমুদ্রযাত্রার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি আকারে ছোট থেকে বড় হতে পারে ও অনেক সময় ব্যক্তিগত বা চার্টার পরিষেবায় ব্যবহার করা হয়। আধুনিক ইয়টগুলোতে সব ধরনের আরামদায়ক সুযোগ-সুবিধা থাকে। যেমন: কেবিন, কিচেন, বিনোদনের জন্য ডেক এবং কখনও কখনও স্পোর্টস এক্টিভিটিসের সুবিধাও।
বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশ এবং প্রযুক্তিবান্ধব ইয়টের নাম, একুয়া। এখানে বৈচিত্রতা ও প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটে খোলা সমুদ্রের সাথে। একুয়া একটি ল্যাটিন শব্দ, এর অর্থ পানি। ১১২ এম হাইড্রোজেন-ইলেকট্রিক লাক্সারি এই সুপারইয়টটি ডিজাইন করেছে ‘সিন্ ইয়ট আর্কিটেকচার এন্ড ডিজাইন’। একুয়া কোনো সাধারণ ইয়ট নয়, এটি সামুদ্রিক প্রযুক্তির একটি বিপ্লব।
প্রযুক্তি এবং লাক্সারির সংমিশ্রণ কেমন হতে পারে তার উৎকৃষ্ট একটি উদাহরণ, একুয়া। হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল প্রযুক্তি এই ইয়টের মূল আকর্ষণ। লিকুইড হাইড্রোজেন ব্যবহারের কারণে একুয়ার কার্বন নিঃসরণের মাত্রা শূণ্য এবং ইঞ্জিনের কোনো শব্দ নেই। টেকসই ভ্রমণের জন্য তাই একুয়াই সেরা। ৭টি কেবিনে মোট ১৪ জনকে সেবা দিতে প্রস্তুত ৩১জন ক্রু মেম্বারের এই ইয়টটি। একুয়ায় প্রবেশের সাথে সাথে আপনি অবিশ্বাস্যকর স্বস্তি এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মহামিলন দেখতে পাবেন। ম্যানুয়াল অথবা অটোমোটেডেড সিস্টেমের মাধ্যমে আপনি ভিতরের সুবিধাগুলো উপভোগ করতে পারবেন নিজের মতো করে। বিশাল সমুদ্রের মাঝে ইনফিনিটি সুইমিং পুল এবং ডেকের সুবিশাল লাউঞ্জ লাক্সারিকে সংজ্ঞায়িত করে নতুনভাবে। একুয়ায় আরো আছে হেলিপ্যাড, জিম, স্পা এবং অত্যাধুনিক আসবাবে সজ্জিত কেবিন যার জানালাগুলো বুলেট প্রুফ। একুয়ার ভিতরে যেকোনো প্রান্ত থেকে যেন সমুদ্রকে দেখা যায় তা ডিজাইনে নিশ্চিত করা হয়েছে।
একুয়া, ছবি: ইয়টচার্টারফ্লিট
লম্বায় ৪০০ ফিটের এই ইয়টটি বানাতে ৩ বছর সময় নেওয়া হয়েছে। সোনা এবং প্লাটিনাম দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এর ডাইনিং, ডেক, সিঁড়ির রেলিং ও নোঙ্গর। এছাড়াও ভিতরে সাজানো আছে প্যানারমিক একুইরিয়াম, দামি ডায়ামন্ডসহ নানা ভাস্কর্য। একুয়ার মূল্য ধরা হয়েছে ৬৪৪ মিলিয়ন ডলার, বাংলা টাকায় ৭০,৮৪০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ইয়টটি বানানো শেষ হলে বিক্রির জন্য বাজারে তোলা হবে বলে জানা যায়। সূর্য ডোবার সাথে সাথে একুয়া রূপান্তরিত হয় এক আলোকোজ্যিৎ আভিজাত্যে। আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে স্মরণীয় করে তোলে একুয়া।
