Home বিশ্ব ক্যান্সার আক্রান্ত বাইডেনের পাশে ট্রাম্প

ক্যান্সার আক্রান্ত বাইডেনের পাশে ট্রাম্প

২৫ views

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রোস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়েছে, যা ইতিমধ্যে তার হাড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। রোববার তার কার্যালয় এক বিবৃতিতে এ খবর জানিয়েছে। গত সপ্তাহে ৮২ বছর বয়সী বাইডেন প্রস্রাবজনিত উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। এরপর শুক্রবার তার প্রোস্টেট ক্যানসার শনাক্ত হয়। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে বাইডেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সুস্থতা কামনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি বার্তা পোস্ট করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

এ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, তিনি ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ‘জো বাইডেনের সাম্প্রতিক রোগনির্ণয়-সংক্রান্ত খবর শুনে গভীরভাবে মর্মাহত’। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা জিল ও তার পরিবারকে আমাদের আন্তরিক শুভকামনা জানাচ্ছি। আমরা জো–র দ্রুত আরোগ্য ও সুস্থতা কামনা করছি।’

বাইডেন ও তার পরিবার চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে ভাবছেন। সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, এ ক্যান্সার হরমোন-সংবেদনশীল। এর অর্থ হলো, এটি সম্ভবত নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। ক্যান্সার শনাক্তের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও ক্ষমতাসীন দল রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ থেকে সমর্থন ও সহানুভূতি পাচ্ছেন বাইডেন।

বাইডেনের শনাক্ত হওয়া ক্যানসার বেশ আগ্রাসী ধরনের। তার গ্লিসন স্কোর ১০-এর মধ্যে ৯। যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম ক্যান্সার গবেষণা ও তহবিল সংস্থা ক্যান্সার রিসার্চ ইউকের মতে, এ ধরনের ক্যানসার `উচ্চ-গ্রেড’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এটা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

গ্লিসন স্কোর প্রোস্টেট ক্যান্সারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার মাত্রা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এই স্কোর ক্যান্সারের কোষের আকার, গঠন ও ছড়ানোর ধরন দেখে নির্ধারণ করা হয়। ক্যানসার কতটা আক্রমণাত্মক বা তীব্র এবং কেমন চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে, তা এই স্কোর থেকে জানা যায়।

এক বছরের সামান্য বেশি সময় আগে বয়স ও স্বাস্থ্যজনিত উদ্বেগের কারণে ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে নাম প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিলেন বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তি হিসেবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্যানুযায়ী, পুরুষেরা ত্বকের ক্যান্সারে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন। এরপর তাদের মধ্যে প্রোস্টেট ক্যান্সারের হার সবচেয়ে বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) মতে, প্রতি ১০০ পুরুষের মধ্যে ১৩ জন জীবনের কোনো না কোনো সময় প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হবেন। সিডিসি বলছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর থেকে বাইডেন বেশির ভাগ সময় লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন। এর থেকে তিনি হাতে গোনা কয়েকবার জনসমক্ষে এসেছেন। সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট এপ্রিলে শিকাগোতে একটি সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তৃতা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবন্ধী অধিকারবিষয়ক গোষ্ঠী ‘অ্যাডভোকেটস, কাউন্সেলরস অ্যান্ড রিপ্রেজেন্টেটিভস ফর দ্য ডিজেবল্ড’ সম্মেলন আয়োজন করেছিল।

মে মাসে বাইডেন বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। হোয়াইট হাউস ছেড়ে আসার পর এটিই তার প্রথম সাক্ষাৎকার। সেখানে তিনি স্বীকার করেন, ২০২৪ সালের নির্বাচন থেকে নাম প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত তার জন্য ‘কঠিন’ ছিল। মে মাসেই এবিসি টেলিভিশন চ্যানেলের ‘দ্য ভিউ’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন বাইডেন। সেখানে তাকে হোয়াইট হাউসের শেষ বছরে তার স্মৃতিশক্তি হ্রাস–সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘এটি সমর্থন করার মতো কোনো প্রমাণ নেই।’

বাইডেন অনেক বছর ধরে ক্যান্সার গবেষণার পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। ২০২২ সালে তিনি ও তার স্ত্রী জিল বাইডেন ‘ক্যান্সার মুনশট’ উদ্যোগ পুনরায় শুরু করেন। ২০৪৭ সালের মধ্যে ৪০ লাখের বেশি ক্যান্সারের মৃত্যু প্রতিরোধে গবেষণা ত্বরান্বিত করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য। বাইডেনের বড় ছেলে বাউ বাইডেন ২০১৫ সালে মস্তিষ্কের প্রোস্টেট ক্যান্সারে মারা যান।

সূত্র: বিবিসি

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ