বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টে ১৯তম বারের মতো আরোহণ করে নিজের গড়া রেকর্ড ভাঙলেন ব্রিটিশ পর্বতারোহী কেন্টন কুল। এভারেস্ট জয়ী অ-নেপালি ব্যক্তিদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি বার এই শৃঙ্গ জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করলেন।
এই বসন্ত মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া ও অপেক্ষাকৃত শান্ত বাতাসের সুযোগে এ পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি পর্বতারোহী এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছেছেন। ৫১ বছর বয়সী পর্বতারোহী কুল ২০০৪ সালে প্রথমবার এভারেস্টে আরোহণ করেন এবং এরপর থেকে প্রায় প্রতি বছরই শৃঙ্গে ওঠার অভিযান চালিয়ে আসছেন।
রোববার (১৮ মে) নেপালের স্থানীয় সময় ১১টায় (গ্রিনউইচ মান সময় ০৫:১৫) তিনি চূড়ায় পৌঁছেন বলে তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে জানানো হয়।
২০২১ সালে ১৫তম আরোহণে তিনি আমেরিকান ডেভ হানের সঙ্গে যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি বার এভারেস্ট জয় করা নেপালি নন এমন পর্বতারোহীর তালিকায় উঠে আসেন। পরের বছর ১৬তম আরোহণে এককভাবে এই শিরোপা নিজের করে নেন।
১৯৯৬ সালে এক রক ক্লাইম্বিং দুর্ঘটনায় দুই পায়ের গোড়ালির হাড় ভেঙে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা কুলকে জানিয়েছিলেন, তিনি আর কোনোদিন নিজের পায়ে হেঁটে চলতে পারবেন না।
২০২২ সালে এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, তার এই রেকর্ড ততটা বিস্ময়কর নয়, কারণ অনেক নেপালি শেরপাই তার চেয়ে অনেক বেশি বার এভারেস্ট জয় করেছেন।

নিজের রেকর্ড ভেঙে এভারেস্টে ১৯তম বার উঠলেন ব্রিটিশ পর্বতারোহী, ছবি: বিবিসি
তিনি বলেন, ‘শেরপারা এতবার উঠেছেন যে আমি নিজেই অবাক হই, মানুষ আমার বিষয়ে এত আগ্রহ দেখায় কেন।’
এদিকে ৫৫ বছর বয়সী নেপালি পর্বতারোহী কামি রিতা শেরপা এবার তার ৩১তম এভারেস্ট আরোহণের মাধ্যমে নিজস্ব বিশ্ব রেকর্ড ভাঙার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কুলের সর্বশেষ এভারেস্ট জয়ের এই খবরে আসে এমন এক সপ্তাহে, যখন এ পর্বতে এক ফিলিপিনো ও এক ভারতীয় পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছে।
এ মৌসুমে নেপালি কর্তৃপক্ষ ৪৫৮টি আরোহণ অনুমতিপত্র ইস্যু করেছে। এর ফলে এভারেস্টের পাদদেশে বিদেশি পর্বতারোহী ও তাদের সহায়তাকারীদের জন্য তাবু শহর গড়ে উঠেছে।
অধিকাংশ পর্বতারোহীই নেপালি গাইডদের সহায়তায় পর্বতারোহণ করেন, ফলে এ মৌসুমে ৯০০-র বেশি মানুষ এভারেস্ট চূড়ার পথে পা রাখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বের ১০টি সর্বোচ্চ শৃঙ্গের মধ্যে আটটিই নেপালে অবস্থিত, ফলে প্রতি বসন্তেই শত শত অভিযাত্রী দেশটিতে আসেন।
১৯৫৩ সালে এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নোরগে শেরপার প্রথম সফল আরোহণের পর থেকে নেপালে পর্বতারোহণ এক লাভজনক বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে।
গত বছর ৮০০-র বেশি অভিযাত্রী এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছেন, যার মধ্যে ৭৪ জন উত্তরে তিব্বতের দিক থেকে অভিযান পরিচালনা করেন।
সূত্র: বিবিসি ও এএফপি