Home বিশ্ব কেঁপে উঠল ইসরায়েল, প্রথমবার হাইপারসনিক মিসাইল ছুড়ল ইরান

কেঁপে উঠল ইসরায়েল, প্রথমবার হাইপারসনিক মিসাইল ছুড়ল ইরান

২৯ views

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা টানা ছয়দিনের সংঘর্ষ বুধবার নতুন মাত্রা পেয়েছে। ইরান প্রথমবারের মতো দাবি করেছে তারা ইসরায়েলের উদ্দেশে ফাত্তাহ-১ নামে একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে।

তেহরানের এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আন্তর্জাতিক অঙ্গণে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ, এতদিন হাইপারসনিক কেবল হুমকি-ধামকির মধেই সীমাবদ্ধ ছিল। এবার সরাসরি এই ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার হল। এতে কেঁপে উঠে ইসরায়েল।

সকাল থেকেই ইরানের দিক থেকে ছোঁড়া একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র এসে আঘাত হানে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের আকাশে। শহরের একাধিক এলাকায় শোনা যায় বিস্ফোরণের শব্দ। প্রায় একই সময়ে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলা চালায় তেহরান ও কারাজ শহরের আশপাশে। ইরানের রাজধানীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

২০২৩ সালে ইরান তাদের এই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রথম সামনে আনে। তখনই সেনাবাহিনী জানায়, এই মিসাইল ৪০০ সেকেন্ডের মধ্যে তেল আবিবে পৌঁছে যেতে পারে। সে সময় এক বিশাল ব্যানারে লেখা ছিল: ‘৪০০ সেকেন্ড টু তেল আবিব’। এই প্রথম এই অস্ত্রকে মাঠে নামাল ইরান।

পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে আরও একটি কারণে-মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানকে। জি-৭ সম্মেলন থেকে আচমকাই কানাডা থেকে ওয়াশিংটন ফিরেন ট্রাম্প। আর দেশে ফিরে একের পর এক পোস্ট করেছেন ট্রুথ সোশ্যাল প্লাটফর্মে।

লিখেছেন, ‘আমরা জানি আয়াতুল্লাহ খামেনি কোথায় আছেন। তাকে এখনও হত্যা করছি না, কিন্তু আমাদের ধৈর্যের সীমা পেরিয়ে যাচ্ছে।’ এর কিছুক্ষণ পরই আরও এক পোস্টে লেখেন, ‘ইরানের উচিত এখনই নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করা।’

সঙ্গে জানিয়েছেন, মার্কিন সেনাবাহিনী আপাতত প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে থাকলেও, প্রেসিডেন্ট পর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠকে আক্রমণাত্মক কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাবে এবার মুখ খুলেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তার বার্তা, ‘যুদ্ধ শুরু। আলি খায়বারে ফিরে গেল।’ পরের বার্তায় তিনি বলেন, ‘জায়নিস্টদের (ইহুদিদের) কঠিন জবাব দিতে হবে। তাদের প্রতি কোনো দয়া নয়।’

ইরানের শেষ রাজবংশের উত্তরাধিকারী রেজা পাহলভি বর্তমানে প্রবাসে রয়েছেন, তার দাবি, খামেনি আর নিয়ন্ত্রণে নেই। তিনি এখন মাটির নিচে লুকিয়ে রয়েছেন। এই শাসন কাঠামো ধসে পড়ছে।’

মার্কিন প্রশাসন ইতিমধ্যেই আরও যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। আগের কিছু মিশনের সময় বাড়ানো হয়েছে। হোয়াইট হাউস জানায়,  ফোর্স এখনো সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়নি, তবে পরিস্থিতি পাল্টাতে সময় লাগবে না।

যুদ্ধ এখন আর সীমান্তে আটকে নেই। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার, আমেরিকার সরাসরি সম্ভাব্য সম্পৃক্ততা ও ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বিপজ্জনক দিকেই যাচ্ছে।

বিশ্ব এখন তেহরান, তেল আবিব ও ওয়াশিংটন এই তিন শহরের দিকে তাকিয়ে আছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত কেবল এই অঞ্চল নয়, পুরো  বিশ্বকেই প্রভাবিত করতে পারে বলে ধারণা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

সূত্র :  আল জাজিরা, ফার্স্ট পোস্ট, তেহরান টাইমস

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ