Home লাইফস্টাইল বিনা তেলে রান্না খাবার কতটা উপকারি?

বিনা তেলে রান্না খাবার কতটা উপকারি?

ফাহমিদা শিকদার
২৬ views

বর্তমান যুগে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষ খাদ্যাভ্যাসেও আনছে পরিবর্তন। বিশেষ করে ওজন কমানো, হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকেই খুঁজছেন কম ক্যালরিযুক্ত ও কম চর্বিযুক্ত খাবার। এই প্রেক্ষাপটে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে “বিনা তেলে রান্না” বা “অয়েল-ফ্রি কুকিং” ধারা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—বিনা তেলে রান্না করা খাবার কি আসলেই স্বাস্থ্যকর?

তেলের ভূমিকা: দরকারি না ক্ষতিকর?
তেল আমাদের শরীরে চর্বির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। বিশেষ করে ভালো চর্বি—যেমন অলিভ অয়েল, নারিকেল তেল বা সরিষার তেল—হৃদপিণ্ড ও মস্তিষ্কের জন্য উপকারি। এটি ভিটামিন এ, ডি, ই, ও কে শোষণ করতে সহায়তা করে। তবে অতিরিক্ত ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে যেকোনো তেলই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। উচ্চ তাপে তেল গরম হলে তা থেকে ট্রান্স ফ্যাট তৈরি হয়, যা রক্তে কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও স্থূলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

বিনা তেলে রান্নার উপকারিতা

  • তেল ছাড়া রান্না করা খাবারে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  •  তেলযুক্ত খাবার অনেক সময় হজমে সমস্যা করে, বিশেষ করে যাঁদের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে। অয়েল-ফ্রি খাবার তুলনামূলকভাবে সহজে হজম হয়।
  •  কম তেল খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, ফলে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমে।
  •  কম চর্বিযুক্ত খাবার রক্তে চিনির মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।

কীভাবে রান্না করবেন বিনা তেলে?
আধুনিক রান্নার পদ্ধতিতে তেলের বিকল্প হিসেবে স্টিমিং, গ্রিলিং, বেকিং, বয়েলিং ও সতে পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে। পেঁয়াজ, রসুন বা অন্যান্য মসলা সামান্য পানি বা ভেজিটেবল স্টকে ভেজে রান্না করা যায়। অনেকে আবার তেলে ভাজার পরিবর্তে এয়ার ফ্রায়ার ব্যবহার করছেন, যা তেল ছাড়াই তেলে ভাজা খাবার তৈরি করে।

সবসময় কি তেল বাদ দেওয়া উচিত?
না, একেবারে তেল বাদ দিয়ে দীর্ঘদিন চলা শরীরের জন্য উপকারি নাও হতে পারে। কিছু ভালো তেল—যেমন এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বা সরিষার তেল—পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত, কারণ এতে থাকে ওমেগা-৩, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক উপাদান। সয়াবিন তেল খাওয়া কমিয়ে এই তেল বা ঘি অথবা বাটার দিয়ে রান্না করলে খাবারের পুষ্টিগুণ বেড়ে যাবে।

বিনা তেলে রান্না স্বাস্থ্যকর, যদি তা সঠিক উপায়ে এবং পরিমিত খাদ্য তালিকার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তবে সবসময় “তেল মানেই খারাপ”—এই ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের উচিত ভালো তেল নির্বাচন ও পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা। স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য খাবারে সচেতনতা যেমন জরুরি, তেমনি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিও অপরিহার্য।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ