Home বিশ্ব চলে গেলেন বিশ্বের সবচেয়ে ‘গরিব প্রেসিডেন্ট’ হোসে মুজিকা 

চলে গেলেন বিশ্বের সবচেয়ে ‘গরিব প্রেসিডেন্ট’ হোসে মুজিকা 

৪৩ views

না ফেরার দেশে চলে গেলেন ‘পেপে’ নামে পরিচিত উরুগুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসে মুজিকা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। ২০১০-২০১৫ সাল পর্যন্ত উরুগুয়ের প্রেসিডেন্টেরর দায়িত্ব পালন করেন। উরুগুয়ে শাসন করা সাবেক এই গেরিলা তার পরিমিত জীবনযাপনের কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ‘গরিব প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইয়ামান্দু ওরসি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে তার পূর্বসূরির মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আপনি আমাদের যা কিছু দিয়েছেন ও জনগণের যা করেছেন তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।’

হোসে

ফেব্রুয়ারিতে উরুগুয়ের মন্টেভিডিওতে নিজের খামারে বৈদ্যুতিক গাড়ি চালাচ্ছেন হোসে মুজিকা, ছবি: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

তিনি খাদ্যনালীর ক্যান্সারে ভুগছিলেন বলে জানা গেছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি খুব সাধারণ জীবনযাপন করেছিলেন, তিনি ভোগবাদের সমালোচনা করতেন এবং সামাজিক সংস্কার নিয়ে কাজ করেছিলেন। এতে মুজিকা লাতিন আমেরিকা ও এর বাইরেও সুপরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন।

মাত্র ৩৪ লাখ বাসিন্দার দেশ উরুগুয়ের প্রেসিডেন্টে হিসেবে তার বৈশ্বিক জনপ্রিয়তা ছিল কল্পনাতীত। তরুণ বয়সে মুজিকা উরুগুয়ের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক শক্তি ন্যাশনাল পার্টির সদস্য ছিলেন।

হোসে

২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসে মুজিকা, ছবি: ডয়চে ভেলে

একবার তিনি বলেছিলেন, রাজনীতির পাশাপাশি বই ও জমিতে কাজ করতে ভালো লাগত তার। কাজের প্রতি এই আবেগ তিনি মায়ের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। মুজিকা দেশটির রাজধানী মন্টেভিডিওতে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় হন।

১৯৬০-এর দশকে তিনি টুপামারোস ন্যাশনাল লিবারেশন মুভমেন্ট (এমএলএন-টি) প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন। এটি একটি বামপন্থী শহুরে গেরিলা গ্রুপ ছিল। যারা হামলা, অপহরণ ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করত। যদিও তিনি সবসময় বলতেন, কখনো কোনো হত্যা করেননি।

খামার

২০০৯ সালে নিজের খামারে কাজ করছেন হোসে মুজিকা, এরপরই ২০১০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, ছবি: ডয়চে ভেলে

কিউবার বিপ্লব ও আন্তর্জাতিক সমাজতন্ত্রে প্রভাবিত হয়ে, এমএলএন-টি উরুগুয়ের সরকারের বিরুদ্ধে গোপনে প্রতিরোধ প্রচারণা শুরু করে। যদিও তৎকালীন সরকার সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ছিল, তবুও বামপন্থীরা ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী বলে অভিযোগ করতেন।

এ সময় মুজিকাকে চারবার আটক করা হয়। এর মধ্যে একবার, ১৯৭০ সালে তাকে ছয়বার গুলি করা হয় এবং সেবার মৃত্যুর খুব কাছ থেকে বেঁচে ফেরেন।

ক্ষমতা হস্তান্তর

২০১৫ সালে মন্টেভিডিওতে মুজিকা তার উত্তরসূরি তাবারে ভাজকেজের হাতে প্রেসিডেন্টের পদ হস্তান্তর করছেন, পাশে করতালি দিচ্ছেন লুসিয়া টোপোলানস্কি, ছবি: সিএএন

তিনি দু’বার কারাগার থেকে পালান, একবার ১০৫ এমএলএন-টি বন্দীদের সঙ্গে একটি টানেলের মধ্য দিয়ে পালান। এ ঘটনাটি ছিল উরুগুয়ের কারাগারের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পালানোর ঘটনা।

১৯৭৩ সালে উরুগুয়ের সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থান ঘটালে তাকে ‘নয়জন জিম্মির’ একটি দলে রাখা হয়। ১৯৭০ ও ১৯৮০ দশকে তিনি ১৪ বছরের বেশি কারাগারে ছিলেন মুজিকা। এসময় তিনি নির্যাতনের শিকার হন। সেই সময়ের বেশিরভাগ সময় তিনি একা ছিলেন। ১৯৮৫ উরুগুয়ে আবার গণতন্ত্রে ফিরলে তিনি মুক্তি পান।

সূত্র: বিবিসি, সিএনএন ও ডয়চে ভেলে

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ