প্রতিবেশি ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বে রাশিয়ার সবচেয়ে কাছের বন্ধু হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে চীন। এই কঠিন সময়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন চাইনিজ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তবে দেশটির গাড়ির বাজারে বেইজিংয়ের রমরমা ব্যবসা নিয়ে খুবই অখুশি মস্কো। এ জন্য চীনা গাড়ি আমাদানিতে শুল্ক কর বাড়িয়েছে দেশটি।
হঠাৎ করে রাশিয়ার কর বাড়ানোর পেছনে যুক্তিযুক্ত কারণ রয়েছে। গত বছর দেশটিতে ১০ লাখ গাড়ি বিক্রি করেছে চীনের গাড়ি কোম্পানিগুলো। আগের বছরের তুলনায় এটা সাতগুণ বেশি। যা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাশিয়ার।
চীনা পেসেঞ্জার কার এসোসিয়েশনের (সিপিসিএ) তথ্য বলছে, গাড়ি রপ্তানিতে এখন দেশটির সবচেয়ে বড় বাজার রাশিয়া। চেরি, গিলি ও গ্রেট ওয়াল মটরের মতো গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো রাশিয়ার প্রায় দুই তৃতীয়াংশ বাজার দখল করে রয়েছে।
গাড়ি রপ্তানিতে এখন চীনের সবচেয়ে বড় বাজার রাশিয়া, ছবি: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
দেশীয় গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোকে সুরক্ষা দিতে শুল্ক কর বাড়িয়েছে রাশিয়া। আগে গাড়ি আমদানিতে কর দিতে হতো ৫ হাজার ৭৯০ ডলার। এটা বাড়িয়ে এখন ৭ হাজার ৫০০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে রুশ সরকার। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রুশ বাজার থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে পশ্চিমা কোম্পানিগুলো। এই শূন্যতা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে বেইজিং, যা ঝুঁকিতে ফেলছে রাশিয়ার গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোকে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অটোভাজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জানান, গত বছর চীনের গাড়ি যে পরিমাণ আমদানি হয়েছে, এটা স্থানীয় কোম্পানি ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসার জন্য বড় ধরনের হুমকি। গত বছর ৬ দশমিক ৪১ মিলিয়ন ডলারের গাড়ি রপ্তানি করেছে চীন। দেশটির গাড়ি রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার হচ্ছে রাশিয়া, মেক্সিকো ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এদিকে জার্মান ও জাপানের কোম্পানিগুলোকে হটিয়ে ইলেক্ট্রনিক গাড়ি বিক্রিতে ব্রাজিল, মেক্সিকো ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বাজারও দখল করেছে চীন। ২০২৪ সালে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। আর চীনের ইলেক্ট্রনিক গাড়ির ওপর শুল্ক বসাতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার
