নিজের রক্তে বিরল অ্যান্টিবডি দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জেমস হ্যারিসন প্রায় ২৪ লাখ শিশুর প্রাণ বাঁচিয়েছেন। সেই হ্যারিসন ৮৮ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। গতকাল সোমবার তার পরিবার জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের একটি নার্সিং হোমে ঘুমন্ত অবস্থায় গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু হয়।

১৯৬৭ সাল থেকে রক্ত দান করছেন জেমস হ্যারিসন, ছবি: এনপিআর
‘গোল্ডেন আর্ম’ হিসেবে পরিচিত হ্যারিসনের রক্তে বিশেষ অ্যান্টিবডি ছিল। যেসব গর্ভবতীর রক্তে তাদের অনাগত শিশুদের সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে, সেই মায়েদের ওষুধ তৈরিতে ‘অ্যান্টি-ডি’ ব্যবহৃত হয়। অ্যান্টি-ডি টিকা অনাগত শিশুকে রক্তের একটি প্রাণঘাতী রোগ থেকে রক্ষা করে, যা ভ্রণ বা নবজাতকের হিমোলাইটিক ডিজিজ বা এইচডিএফএন নামে পরিচিত।

১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে ৫৩৭তম বারের মতো রক্তদান করছেন জেমস হ্যারিসন, ছবি: বিবিসি
হ্যারিসনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান রেড ক্রস ব্লাড সার্ভিস। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ১৪ বছর বয়সে বুকে বড় ধরনের অস্ত্রোপচারের সময় রক্ত নেওয়ার পর তিনি রক্তদাতা হওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন; কিন্তু ১৮ বছর বয়সে রক্তরস (প্লাজমা) দান শুরু করেছিলেন, যা অব্যাহত রেখেছিলেন ৮১ বছর বয়স পর্যন্ত। দুই সপ্তাহ পর পর তিনি রক্ত দান করতেন।

মৃত্যুর আগে প্রায় ২৪ লাখ শিশুর প্রাণ বাঁচিয়েছেন জেমস হ্যারিসন, ছবি: ইউরো নিউজ
২০০৫ সালে প্লাজমা দানে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন হ্যারিসন। যুক্তরাষ্ট্রের এক ব্যক্তি ২০২২ সালে তাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ওই রেকর্ড ধরে রেখেছিলেন এ অস্ট্রেলিয়ান। হ্যারিসনের মেয়ে ট্রেসি মেলোশিপ বলেন, কোনো খরচ বা কষ্ট ছাড়াই বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবন বাঁচাতে পেরে বাবা গর্ববোধ করতেন।
সূত্র: এনপিআর, ইউরো নিউজ ও বিবিসি