দ্বিতীয়বারের মতো ২০ জানুয়ারি ক্ষমতার মসনদে বসেছেন রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণ অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন প্রযুক্তি বিলিয়নিয়ার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। প্রেসিডেন্টের সাথে প্রযুক্তিশিল্পের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রতীক হিসেবেই তারা উপস্থিত হন বলে ধারণা করা হচ্ছে। হচ্ছে সমালোচনাও।
স্পেসএক্স ও টেসলা প্রধান ও বর্তমান দুনিয়ার শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক, প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই, ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ- ইন্ট্রাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ, আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস, অ্যাপলের সিইও টিম কুক, টিকটকের প্রধান নির্বাহী শাউ জি চিউ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে প্রথম সারিতে জেফ বেজোসের বাগ্দত্তা লরেন সানচেজ ও জাকারবার্গের স্ত্রী প্রিসিলা চ্যানও বসেন।
ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল রোটান্ডায় অভিষেক অনুষ্ঠানে শপথ নিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ছবি: দ্য অস্ট্রেলিয়ান
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানটি খোলা আকাশের নিচে হওয়ার কথা থাকলেও এদিন ওয়াশিংটনে তীব্র শীতের কারণে তা ক্যাপিটলের অভ্যন্তরে ঘরোয়াভাবে আয়োজন করা হয়। এতে নির্ধারিত আসনব্যবস্থা পরিবর্তিত হয়। ফলে প্রযুক্তিশিল্পের নেতাদের ট্রাম্প পরিবারের সদস্যদের পাশে এবং মন্ত্রিসভার সদস্যদের সামনে বসানো হয়।
আসনব্যবস্থা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। কারণ মন্ত্রিসভার প্রস্তাবিত সদস্যদের সামনে এসব প্রযুক্তি বিলিয়নিয়ারদের আসন দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গুটিকয়েক মানুষের হাতে থাকা বা অলিগার্কির ছায়া হিসেবে দেখছেন অনেকে।
পেছনের সারিতে বসেন টিকটকের সিইও শাউ জি চিউ, ছবি: চ্যানেল নিউজ এশিয়া
তবে সামনের সারিতে বসার কারণেই সমালোচনা হচ্ছে না। এক মাস আগেই ট্রাম্পকে আজীবন সাজা ভোগ করার জন্য হুমকি দিয়েছিলেন মার্ক জাকারবার্গ। এ ছাড়া জেফ বেজোস ট্রাম্পের বিরোধিতা করে তার প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসের পক্ষে কাজ করেছেন। জাকারবার্গের মেটা ও বেজোসের ওয়াশিংটন পোস্টও সরাসরি ট্রাম্পের বিরোধিতা করেছিল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হলেও পেছনের সারিতে বসেন টিকটকের সিইও শাউ জি চিউ। ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র একদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হয় টিকটক। তবে ট্রাম্পের আশ্বাসে ফের দেশটিতে চালু হয় টিকটক। এদিকে টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক ট্রাম্পের পক্ষে ২৭৭ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছেন।এ ছাড়া সশরীরে উপস্থিত হয়ে একাধিক নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে ট্রাম্পের জনসমর্থন বাড়ান।
ওয়াশিংটনের ক্যাপিটলের ওয়ান এরিনায় প্রেসিডেন্টশিয়াল প্যারেডে যোগ দিচ্ছেন ট্রাম্প, ছবি: সিনহুয়া নিউজ
বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেটওয়ার্কগুলো নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি তারা বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিত্বও। এটি প্রযুক্তিখাতের বিলিয়নিয়ারদের সাথে ট্রাম্পের সখ্যতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। জো বাইডেন তার বিদায়ী ভাষণে প্রযুক্তিখাতের বড় কোম্পানিগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সদ্য বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্নিনটন, জর্জ ডাব্লিউ বুশ, বারাক ওবামাসহ অনেকে। ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ। এই মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র নতুন এক ‘সোনালি যুগে’ প্রবেশ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
তথ্যসূত্র: জিও নিউজ ও সিএনএন
