Home টপ পোস্ট এস আলমের শেয়ার বিক্রি করে ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় করবে ইসলামী ব্যাংক

এস আলমের শেয়ার বিক্রি করে ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় করবে ইসলামী ব্যাংক

ইকবাল হোসেন
১৫৪ views

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ইসলামী ব্যাংকের  বেশকিছু শেয়ার জব্দ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এই শেয়ারগুলোর বেশিরভাগই ছিল বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন।  এখন সেগুলো বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ইসলামী ব্যাংক। 

সোমবার (১৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ব্যাংকের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এ তথ্য জানান। তিনি জানান, পাচার করা টাকা পুনরুদ্ধার কৌশলের অংশ হিসেবে এসব শেয়ার বিক্রি করা হবে।

ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ ও আমানতের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার ব্যবধান রয়েছে। এস আলম গ্রুপের শেয়ার বিক্রি এবং নতুন শেয়ার ইস্যু করে এই ঘাটতি কমানো হবে।  

এস আলম গ্রুপের কাছে মালিকানাধীন শেয়ারের ফেস ভ্যালু (অভিহিত মূল্য) ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রতিটি শেয়ারের দাম ৬০ টাকা হিসাবে এওবস শেয়ারের বর্তমান মোট বাজারমূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।  বাকি ১০ হাজার কোটি টাকা নতুন শেয়ার ইস্যু করে সংগ্রহ করা হবে বলে জানান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। 

ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, এস আলম ইসলামী ব্যাংকের ১৭টি শাখা থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। শুধু টাকা নেয়নি, আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ব্যাংকের যে সম্পর্ক ছিল, সেটাও ধ্বংস করে দিয়েছে। পাশাপাশি পুরোনো উদ্যোক্তা সৌদি প্রতিষ্ঠান আল রাজিকে আনার চেষ্টা চলছে। আইএফসিকেও যুক্ত করার চেষ্টা করা হবে। জানুয়ারি মাসের মধ্যে তাদেরকে আবার বিনিয়োগ করতে আমন্ত্রণ জানানো হবে।  

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, সব ব্যাংককে রক্ষা করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব। পরিচালনায় বদল এনেও যেসব ব্যাংক এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি, তাদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সব আমানতকারীকে রক্ষা করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ব্যাংকের পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানসহ পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, অনিয়মের মাধ্যমে যাঁরা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়েছেন, সেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আলাদাভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কোনো প্রতিষ্ঠান মরতে দেওয়া হবে না। কারণ, সব প্রতিষ্ঠান জাতীয় সম্পদ। এর সঙ্গে ব্যাংকের বিনিয়োগ, উৎপাদন ও সরবরাহ জড়িত। এস আলমের শাস্তির জন্য আদালতে মামলা দায়ের হবে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে, তাদের কী হবে।

ইসলামী ব্যাংকের উন্নতি হচ্ছে জানিয়ে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, তিন মাসে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা আমানত বেড়েছে। প্রবাসী আয় বাড়ছে। নতুন বিনিয়োগ দেওয়া বন্ধ আছে। ব্যাংকের ২ হাজার ৭০০ এজেন্ট পয়েন্টে তিনজন করে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা ব্যাংকের আমানত বাড়াতে ভূমিকা পালন করতে পারেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মালিকানা পরিবর্তনের পর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার ছাড়তে শুরু করেন। এস আলম গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগে ইসলামী ব্যাংকের ৫০ শতাংশের বেশি মালিকানা বিদেশিদের হাতে ছিল। এখন যা কমে ১৩ শতাংশে নেমেছে।

এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ধীরে ধীরে শেয়ার ছেড়ে দেয় ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি), দুবাই ইসলামী ব্যাংক, ইসলামিক ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড করপোরেশন দোহা, ইসলামিক ব্যাংকিং সিস্টেম ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিং লুক্সেমবার্গ, শেখ আহমেদ সালেহ জামজুম, শেখ ফুয়াদ আবদুল হামিদ আল-খতিব, আল-রাজি গ্রুপ, কুয়েতের সরকারি ব্যাংক কুয়েত ফাইন্যান্স হাউস, সৌদি কোম্পানি আরবসাস ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিস্ট এজেন্সিসহ বেশির ভাগ বিদেশি উদ্যোক্তা ও সাধারণ শেয়ারধারী প্রতিষ্ঠান।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ