সী ফুড বা সামুদ্রিক খাবারে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমন ভয়াবহ তথ্য দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি পোর্টল্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এই গবেষণাটি পরিচালনা করেন। গবেষণায় মাছ ধরার অরিগনের নৌকা থেকে কেনা ১৮২টি সামুদ্রিক খাবারের নমুনার মধ্যে ১৮০টিতে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। শতাংশের তুলনায় যা ৯৯ %।
চিংড়িতে এর উপস্থিতির মাত্রা সবচেয়ে বেশি। সামুদ্রিক খাবারে মাইক্রোপ্লাস্টিকের মতো বিপজ্জনক পদার্থের উপস্থিতি মানব স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ওরিগন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের একটি অঙ্গরাজ্য। সাম্প্রতিক গবেষণায় সামুদ্রিক খাবারে ব্যাপক মাইক্রোপ্লাস্টিক ছাড়াও সংগৃহীত নমুনাগুলোতে টেক্সটাইলের তন্তু শনাক্ত করা হয়েছে। ৮০% সামুদ্রিক প্রাণির শরীরে আছে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি।
এই প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টল্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটির মাইক্রোপ্লাস্টিক গবেষক ও গবেষণা দলের প্রধান এলিস গ্রানেক বলেন, এই গবেষণার ফলাফল বর্তমানে প্লাস্টিক ব্যবহারের একটি গুরুতর সমস্যাকে চিহ্নিত করেছে। যতক্ষণ দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিককে আমরা একটি প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করছি ও এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছি, ততক্ষণ মানুষের খাবারেও এটি দেখতে হবে’’।
গবেষকরা বিশ্বজুড়ে পানির নমুনায় মাইক্রোপ্লাস্টিক শনাক্ত করেছেন। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক সমুদ্র থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশের প্রধান মাধ্যম খাদ্য। এতে পিএফএএস, বিসফেনল ও থ্যালেটস এর মতো ১৬ হাজারের বেশি প্লাস্টিক রাসায়নিক থাকতে পারে।
এই রাসায়নিকগুলো ক্যান্সার, নিউরোটক্সিসিটি, হরমোন ব্যাঘাত বা বিকাশগত সমস্যা তৈরি করতে পারে। এই ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থটি মস্তিষ্ক ও প্লাসেন্টাল বাধা অতিক্রম করতে পারে। যাদের হৃদপিণ্ডের টিস্যুতে এই রাসায়নিকগুলো থাকে তাদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ হয়।
এই গবেষণায় পাঁচ ধরণের ফিন ফিশ ও গোলাপী চিংড়ির নমুনায় চালানো হয়েছিল। গবেষণায় দেখা গেছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক ফুলকা বা মুখ থেকে মানুষের খাওয়া মাংসে ভ্রমণ করতে পারে। দোকান থেকে কেনা লিংকড-এ মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে কারণ এটি সরাসরি নৌকা থেকে কেনা প্লাস্টিকের তুলনায় বেশি প্রক্রিয়াজাত করা হয়।
তবে গবেষকরা সামুদ্রিক খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন না কারণ মাংস ও উৎপাদিত পণ্যেও মাইক্রোপ্লাস্টিক ব্যাপকভাবে পাওয়া গেছে, তাই আপনি যা খান তা পরিবর্তন করলে তার প্রভাব বেশি হবে না, তবে আপনি যা খান তা ধুয়ে ফেললে খাবারে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি কমতে পারে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান ও জিও নিউজ