সৈয়দ আপন আহসানকে নানা রূপে চেনেন দর্শক ও শ্রোতা। তিনি আবৃত্তি করেন, অভিনয় করেন। মিডিয়া কনসালটেন্সির সাথে সম্পৃক্ত। উন্নয়নধর্মী কাজও করেন। এই নাট্যজন আবার বিজ্ঞাপন জগতেরও পরিচিত মুখ। সম্প্রতি অ্যাডভার্টাইজিং এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে (এএএবি) নির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। আছেন রামেন্দু মজুমদার ও ত্রপা মজুমদারের সাথে বিজ্ঞাপনী সংস্থা এক্সপ্রেশন্স লিমিটেডে। এত ব্যস্ততার ফাঁকেও নিয়মিত মঞ্চে সময় দেন তিনি। বৃহস্পতিবার মহিলা সমিতিতে নারীকেন্দ্রিক একটি নাটক মঞ্চস্থ হবে তার নির্দেশনায়।
মিডিয়াতে আপন আহসান নামে পরিচিত এই শিল্পী হ্যালো বাংলাদেশের মুখোমুখি হয়ে খানিকটা অভিমানের কথাই জানালেন। তিনি বলেন, আমি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি, নামীদামি পত্রিকায় কখনও মঞ্চ অর্থাৎ থিয়েটারকে মূল্য দেওয়া হয় না।
তিনি জানান, যেভাবে দেশি-বিদেশি তারকাদের খবর থাকে, বিশেষ করে বিদেশি, তাতে তিনি একটু কষ্টই অনুভব করেন। তিনি বলেন, আচ্ছা যে খবরটা একবার বাইরের অনলাইনে চলে এসেছে তা নতুন করে দেওয়ার মানে কী বলুন তো? বরং তাই কী ঠিক নয় যে আমাদের দেশের সব ধরনের শিল্পীদের খবর আসুক।
কথা প্রসঙ্গে আপন আহসান বলেন, আমি কখনোই বলিনি সবাইকে নিউজ করতে হবে। যারা সংশ্লিষ্ট বিটে কাজ করেন, তারা তো দেখেশুনে ফের নিউজ করতেই পারেন। আমার বিশ্বাস নিয়মিত খোঁজ রাখলে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একজন থিয়েটার শিল্পীর ব্যাপারে একটু হলেও লেখা যায়।
এই বলে নিজেই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, এখন আমি প্রশ্ন করতে চাই, কালচারাল সাংবাদিকতায় যারা আছেন তারা কতটুকু মঞ্চ নাটক দেখেন? তিনি তার মতামত প্রকাশ করে বলেন, যারা এখন কাজ করেন, তারা আসলে মঞ্চ নিয়ে খুব ভাবেন না। লাইক, শেয়ার আর ভাইরালের পিছু দৌড়ে উপমহাদেশের থিয়েটার পিছিয়ে গেছে বলে মনে করেন তিনি।
আপন আহসান আরও বলেন, আবার বন্ধুত্বও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সময় সাংবাদিক-শিল্পী সবাই বন্ধু ছিলাম। ওরা জিজ্ঞেস করে খবর করতো, দেখতে যেতো। দেখে রিভিউ দিতো। এখন এসবের চর্চা নেই। বরং মেকআপ রুমে এসে বা রিহার্সেলের দিন এসে নাটকের শটের মতো ছবি তুলে নিয়ে প্রেস রিলিজ পড়ে কোনোমতে খবর ছেপে দেয়।
তিনি খানিকটা অভিযোগের সুরে বলেন, কেউ কখনও ফোন দিয়েও জানতে চায় না নাটকটির মূল বক্তব্য কী। হ্যালো বাংলাদেশকে তিনি বলেন, আমাদের শিল্পে বন্ধুত্বটা ফিরে এলেই আমার বিশ্বাস এই অভিযোগ আর থাকবে না, প্রেস রিলিজ-ভিত্তিক নাটকের খবর থাকবে না। আমরা চাই সবাই দর্শক হয়ে থিয়েটারে এসে নাটক উপভোগ করে তার আলোচনা-সমালোচনা যাই হোক, তা লিখুক।