পটাসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও ইলেক্ট্রোলাইট, যা শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সহায়তা করে। এটি হৃদপিণ্ড, কিডনি, পেশি ও স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য। পটাসিয়াম শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, পেশির সংকোচন, নার্ভ সিগন্যালিং ও শরীরের তরল ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
পটাসিয়ামের অভাবের লক্ষণ
যদি শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাসিয়াম না থাকে, তাহলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। পটাসিয়ামের অভাবের কিছু লক্ষণ হলো-
- পেশির দুর্বলতা
- অনিয়ন্ত্রিত হৃদস্পন্দন
- উচ্চ রক্তচাপ
- ক্লান্তি ও অবসাদ
- হজমজনিত সমস্যা
পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার
প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন ফল, সবজি ও অন্যান্য খাবারে পটাসিয়াম পাওয়া যায়। নিচে কিছু পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবারের তালিকা দেওয়া হলো-
- কলা পটাসিয়ামের অন্যতম ভালো উৎস। একটি মাঝারি আকারের কলায় প্রায় ৪২২ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর বেদানাও একটি পটাসিয়াম সমৃদ্ধ ফল। মাঝারি আকারের একটি বেদানাতে পটাসিয়াম থাকে ৬৬৬ মিলিগ্রাম।
- মিষ্টি আলু ও সাদা আলুতে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে। একটি আলুতে প্রায় ৯০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম পাওয়া যায়।
- আপেলেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পটাসিয়াম রয়েছে, যা শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য রক্ষা করে।
- গাঢ় সবুজ শাক-সবজিতে প্রচুর পটাসিয়াম থাকে। এক কাপ রান্না করা পালংশাকে প্রায় ৮৪০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে।
- অ্যাভোকাডো পটাসিয়ামের একটি চমৎকার উৎস। আধা কাপ অ্যাভোকাডোতে প্রায় ৩৫০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে।

এ ধরনের পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে কমবে পেশি দূর্বলতা, ছবি: ব্যাপ্টিস্ট হেলথ
- টমেটো ও টমেটো পণ্য যেমন টমেটো সসেও প্রচুর পটাসিয়াম পাওয়া যায়। এক কাপ টমেটো সসে প্রায় ৮০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে।
- কমলা ও কমলার রসে পটাসিয়ামের ভালো মাত্রা রয়েছে। এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে ও ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
- বাদাম, সূর্যমুখী বীজ, তিসিসহ অন্য বীজেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পটাসিয়াম থাকে।
- স্যামন, টুনা ও হালিবাট মাছে পটাসিয়ামের ভালো পরিমাণ পাওয়া যায়।
- মাত্র ১ কাপ ডাবের পানিতে ৬০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম পাওয়া যাবে।
- আর কিছুদিন পরে বাজারে পাওয়া যাবে রসালো তরমুজ। ১ স্লাইস তরমুজে ৬৪০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে।
পটাসিয়াম শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি সুস্থ জীবনযাত্রার একটি অপরিহার্য অংশ। সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাসিয়াম গ্রহণ করলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কমানো সম্ভব। তাই খাদ্যতালিকায় পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ।