Home লাইফস্টাইল অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে বাড়ছে ক্যানসারের ঝুঁকি

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে বাড়ছে ক্যানসারের ঝুঁকি

ফাহমিদা শিকদার
৭২ views

প্রতি বছর ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যানসার দিবস পালন করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এই দিবসটি পালিত হচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এর প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। ২০০০ সালে এই দিবসটির সূচনা হয়।  ফ্রান্সের প্যারিসে “ওয়ার্ল্ড সামিট অ্যাগেইনস্ট ক্যানসার”-এ ক্যানসার গবেষক, চিকিৎসক ও নীতিনির্ধারকদের সমন্বয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ওই সময়, যা “প্যারিস চার্টার” নামে পরিচিত। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কন্ট্রোল (UICC) যৌথভাবে এই দিবস উদযাপন করে, যা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালিত হয়, যার মাধ্যমে মানুষকে ক্যানসারের ঝুঁকি, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতন করা হয়। 

যেকোনো ধরণের ক্যানসারের অন্যতম কারণ অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। আধুনিক জীবনযাত্রার ব্যস্ততার কারণে অনেকেই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন, যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।

ক্যানসারের

সুস্থ খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করে, ছবি: পাব মেল সেন্ট্রাল (পিএমসি)

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
ফাস্টফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত ও মসলাদার খাবার গ্রহণের ফলে শরীরে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। এসব খাবারে ট্রান্স ফ্যাট, কৃত্রিম সংরক্ষণশীল ও রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা দীর্ঘমেয়াদে শরীরের কোষে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংস গ্রহণ বৃহদান্ত্র ক্যানসারের (Colon Cancer) ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত চিনি ও কার্বোনেটেড পানীয় গ্রহণ স্থূলতা বাড়ায়, যা স্তন ও অন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধির সহায়ক। 

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন
নিয়মিত ব্যায়ামের অভাব, ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ ও অনিয়ন্ত্রিত ঘুমের অভ্যাস ক্যানসারের অন্যতম কারণ। ফুসফুস, মুখগহ্বরসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের অন্যতম প্রধান কারণ ধূমপান। শুধু সিগারেট নয়, বরং জর্দা, গুলসহ যে কোনো ধরণের তামাকই ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষ করে, পান পাতার সঙ্গে জর্দা ও গুল ব্যবহারের ফলে দেশে নারীদের মধ্যে মুখগহ্বরের ক্যানসারের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ লিভার ও পাকস্থলী ক্যানসারের জন্য দায়ী হতে পারে। অনিদ্রা ও মানসিক চাপ শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে, যা ক্যানসার কোষ বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।

প্রতিরোধের উপায়
সুস্থ খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করে। প্রচুর শাক-সবজি, ফলমূল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে শরীরের টক্সিন বেরিয়ে যায় এবং কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করা যায়। নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং ক্যানসারের সম্ভাবনা হ্রাস পায়। পাশাপাশি ধূমপান ও মদ্যপান থেকে ১০০ হাত দূরে থাকতে হবে। 

অসচেতন খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ক্যানসারের অন্যতম প্রধান কারণ। সুস্থ ও সঠিক জীবনধারা অনুসরণ করলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। তাই এখনই সচেতন হওয়া জরুরি, কারণ সুস্থ জীবনই হলো দীর্ঘায়ুর চাবিকাঠি। 

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ