স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে বেশ পরিচিত একটি নাম প্রোটিন পাউডার। বিশেষ করে যারা রোজ ওজন কমাতে বা মাসল গঠনের লক্ষ্যে জিমে যান তাদের কাছে এর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। প্রোটিন পাউডার হলো এক ধরনের ডায়াটেরি সাপ্লিমেন্ট, যা প্রাণিজ বা উদ্ভিজ্জ প্রোটিন দিয়ে তৈরি হয়। দ্রুত ওজন কমাতে ও মাসল গঠনের পাশাপাশি শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি কমাতে এর জুড়ি মেলা ভার। এর আরও কিছু গুনাগুণ রয়েছে। যেমন- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখা, হাড়কে শক্তিশালী করা, ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরের সুগারের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
বাজারের নানা ব্র্যান্ডের প্রোটিন পাউডার পাওয়া যায়। তবে এইসব পাউডারে প্রচুর পরিমাণে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ এবং ভারি ধাতুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ক্লিন লেবেল প্রজেক্টের একটি নতুন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, প্ল্যান্ট-বেসড, অর্গানিক এবং চকলেট ফ্লেভারের প্রোটিন পাউডারে সীসা ও ক্যাডমিয়াম পাওয়া গেছে। গবেষণার জন্য ১৬০টি সুপরিচিত প্রোটিন পাউডারের মধ্যে প্রায় অর্ ৪৭ শতাংশে ‘ক্যালিফোর্নিয়া প্রস্তাবনা ৬৫’-এর সীসার জন্য নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করেছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, ২১ শতাং পণ্য আইনের অধীনে অনুমোদিত সীমার দ্বিগুণেরও বেশি মাত্রায় সীসাসহ আরও অনেক ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে।
এই যখন অবস্থা তখন সবার উচিত প্রক্রিয়াজাতকৃত প্রোটিন পাউডার এড়িয়ে চলা। এর স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে আমরা চাইলেই ঘরেই এটি তৈরি করতে পারি। এর জন্য প্রয়োজন হবে আমাদের হাতের কাছে থাকা উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। ঘরে তৈরি প্রোটিন পাউডার একই সঙ্গে সাশ্রয়ী ও স্বাস্থ্যকর। কারণ এতে কোন ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান ও অতিরিক্ত চিনি থাকবে না। নিচে ঘরে প্রোটিন পাউডার তৈরির সহজ একটি রেসিপি দেওয়া হলো:

নানা ধরনের বাদাম, ডাল ও বীজ ব্যবহার করেই তৈরি করা যায় ঘরোয়া প্রোটিন পাউডার। ছবিঃ দ্যা গ্রিন লুট।
প্রোটিন পাউডার তৈরির উপকরণ
কাঠবাদাম বা কাজু বাদাম বা চিনা বাদাম- ১/২ কাপ
কুমড়োর বীজ- ১/২ কাপ
সূর্যমুখীর বীজ- ১/২ কাপ
সেদ্ধ ও শুকানো মসুর ডাল বা ছোলা- ১/২ কাপ
ওটস (গুঁড়ো করা)- ১/২ কাপ
শুকনো নারকেল গুঁড়ো: ১/৪ কাপ
কোকো পাউডার (চকলেট ফ্লেভার চাইলে): ২ টেবিল চামচ
চিনি বা গুড়ের গুঁড়ো (ঐচ্ছিক): ১-২ টেবিল চামচ
চিয়া সিড: ১ টেবিল চামচ
ফ্ল্যাক্স সিড: ১ টেবিল চামচ
প্রণালী
বাদাম ও বীজগুলো হালকা গরম করে ভেজে নিন (তেল ছাড়াই)। এতে গুঁড়ো করা সহজ হবে এবং ভালো স্বাদ আসবে।
মসুর ডাল বা ছোলাগুলো সেদ্ধ করার পর ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। শুকানোর জন্য রোদে বা ওভেন ব্যবহার করতে পারেন।
একটি ব্লেন্ডারে বাদাম, বীজ, ডাল, ওটস এবং শুকনো নারকেল গুঁড়ো দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন।
যদি চকলেট ফ্লেভারের জন্য কোকো পাউডার যোগ করুন।
সংরক্ষণ
মিশ্রণটি চালুনি দিয়ে ছেঁকে নিন, যাতে এটি মসৃণ হয়।
একটি এয়ারটাইট কন্টেইনারে রেখে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।
ব্যবহার
প্রতিদিন একটি গ্লাস দুধ, পানীয় বা স্মুদির সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন।
প্যানকেক, ওটমিল বা দইয়ের সঙ্গেও মিশিয়ে খেতে পারেন।