বিট বা বিটরুট বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সবজি। আমাদের দেশে আগে খুব একটা প্রচলিত না হলেও বর্তমানে নানাবিধ পুষ্টিগুণের জন্য স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছে এর কদর বেড়েছে। এতে রয়েছে অনেক ফাইবার, ফোলেট, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন আর ভিটামিন সি। এছাড়াও আছে প্রোটিন, ভিটামিন বি৬ এবং সামান্য ফ্যাট। বিট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে মস্তিষ্ক ও হজম স্বাস্থ্যের দেখভাল করে থাকে। শরীরে ইনফ্লামেশন ও ক্যান্সারের ঝুঁকিও হ্রাস করতে পারে এই অসাধারণ সবজিটি। বিটে থাকা বিটেইন ও ট্রিপটোফোন মন ভালো রাখতে সাহায্য করে।

শীতের দিনে শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খেতে পারেন এক বাটি বিটের স্যুপ।
ছবিঃ হোলসাম ইয়াম
আজ থেকে হাজার বছর আগে থেকেই বিট খাওয়া হচ্ছে। বেশকিছু প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, খ্রিস্টের জন্মের কয়েকশ বছর আগে ভূমধ্যসাগরীয় কিছু অঞ্চল যেমন, গ্রিক ও রোমান সাম্রাজ্য, মিশর, সিরিয়াতে বিটের চাষ হতো। এ অঞ্চলের বাইরে সেই সময়ে কেবল নেদারল্যান্ডসে বিট চাষের প্রমাণ পাওয়া যায়। রোমানরা অবশ্য বিট চাষ শুরু করে এর শাক খাওয়ার জন্য। বিটের শাক কিন্তু কোনো অংশে বিটের থেকে কম যায় না! এতেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান, বিশেষ করে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, আয়রন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ। মূলত ইউরোপীয়দের হাত ধরে বিট সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
এই সবজিটি কাঁচা এবং নানাভাবে রান্না করে খাওয়া যায় এটি আমরা মোটামুটি সবাই জানি। কাঁচা খেতে চাইলে বানানো যায় বিটের সালাদ, স্মুদি, জুস। বিটের স্মুদি বা জুস কিন্তু শরীরের জন্য অত্যন্ত উপাদেয় একটি খাদ্য। যারা লিভার আর ত্বকের সুস্থতা চান এবং শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে চান তারা নিয়মিত বিটের জুস বা স্মুদি খেতে পারেন।

বিটের সালাদ অত্যন্ত উপাদেয় খাদ্য।
ছবিঃ অল রেসিপিস
বিটরুট সিদ্ধ বা বেক করে অনেক সুস্বাদু খাবার বানানো যায়। শুধু বিট তেল, নুন আর গোলমরিচ দিয়ে রোস্ট খেতে বেশ মজার। চাইলে নিরামিষে মেশাতে পারেন। বিট দিয়ে বানাতে পারেন স্যুপ, কাবাব, হুম্মুস, পাস্তা, নুডুলস, ফ্রাইড রাইস। এতে এসব সাধারণ খাবারগুলোর রঙ আর স্বাদ- দুটোই হবে খাসা। ইদানিং বিট দিয়ে অনেক মিষ্টি খাবার যেমন, রেড ভেলভেট কেক, ব্রাউনি, পুডিং, কুকি, আইসক্রিমও বানানো হচ্ছে। অন্তর্জাল ঘেটে রেসিপি দেখে চাইলে ঘরে বানাতে পারেন এসব সুস্বাদু ইউনিক খাবার।