২০২৫ সালের আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার জিতেছেন ভারতীয় লেখক বানু মুশতাক। কন্নড় ভাষায় রচিত ছোটগল্প সংকলন ‘হার্ট ল্যাম্প’ এর জন্য তিনি এ পুরস্কার জিতেন। ‘হার্ট ল্যাম্প’ বইটিতে ১২টি গল্প রয়েছে, যা ১৯৯০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে রচিত। গল্পগুলো দক্ষিণ ভারতের মুসলিম ও দলিত নারীদের জীবনের সংগ্রাম, ধর্মীয় রক্ষণশীলতা এবং পিতৃতান্ত্রিক সমাজে তাঁদের অবস্থান তুলে ধরে ।
বইটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন দীপা ভাস্তি। এটি প্রথমবারের মতো কোনো কন্নড় ভাষার বই এবং প্রথম ছোটগল্প সংকলন যা এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেল। উল্লেখ্য, বানু মুশতাক দ্বিতীয় ভারতীয় যিনি এই পুরস্কার জিতেছেন। এর আগে প্রথম ভারতীয় হিসেবে ২০১৮ সালে ‘রেত সমাধি’ বইয়ের ইংরেজি অনুবাদ ‘টুম্ব অ্যান্ড স্যান্ড’-এর জন্য ঔপন্যাসিক ও ছোট গল্প লেখিকা গীতাঞ্জলী শ্রী বুকার অর্জন করেন।
হার্ট ল্যাম্প, ছবি: দ্যা বুকার প্রাইজস
বানু মুশতাক একজন আইনজীবী ও নারী অধিকার কর্মী হিসেবে পরিচিত। কর্ণাটকের হাসান শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭০ ও ৮০-এর দশকে বাণ্ডায় সাহিত্য আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যা দলিত ও মুসলিম লেখকদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরেছিল।
দীপা ভাস্তি বইটি ‘ট্রান্সলেটিং উইথ অ্যান অ্যাকসেন্ট’ নামে পরিচিত একটি পদ্ধতি অনুসরণ করে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন। এই পদ্ধতিতে মূল ভাষার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও বহুভাষিকতা বজায় রাখা হয়। এই অনুবাদ ইংরেজি ভাষাভাষী পাঠকদের জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা দিয়েছে।
অনুবাদক দীপা ভাস্তির সঙ্গে বানু মুশতাক, ছবি: এনপিআর
পুরস্কার ঘোষণাটি লন্ডনের টেট মডার্নে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি ম্যাক্স পোর্টার বইটির “সুন্দর, ব্যস্ত, জীবন-উপস্থাপনকারী গল্প” হিসেবে প্রশংসা করেন। পুরস্কারের ৫০,০০০পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় একআশি লক্ষ টাকা) লেখিকা ও অনুবাদক সমানভাবে ভাগ করে নিয়েছেন। পুরস্কার গ্রহণের পর বানু মুশতাক বলেন, ‘এই সম্মান আমি কোনো ব্যক্তি হিসেবে গ্রহণ করছি না, বরং এমন এক কণ্ঠস্বর হিসেবে গ্রহণ করছি, যা আরও বহু কণ্ঠের সঙ্গে সমবেতভাবে উচ্চারিত হয়েছে।’
এই পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে বানু মুশতাক কন্নড় সাহিত্যকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরেছেন এবং দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের কণ্ঠস্বরকে বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিয়েছেন।
