ফেসবুক ছাড়া একটি দিন যেখানে আমাদের কল্পনা করতে কষ্ট হয় সেখানে কিছু দেশে ফেসবুক ব্যবহার করা রীতিমতো অপরাধ। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মধ্যে অন্যতম ফেসবুক। রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডেও এর ব্যবহার সর্বত্র।
তবে এমন অনেক দেশ রয়েছে যারা ফেসবুককে পুরোপুরি অথবা আংশিকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা, জাতীয় নিরাপত্তা, তথ্য নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক নীতিমালার মত নানা কারণ। চলুন জেনে নেই যে সকল দেশে ফেসবুক নিষিদ্ধ।
চীন
চীনে ২০০৯ সাল থেকে ফেসবুক নিষিদ্ধ। উইঘুর মুসলিমদের বিক্ষোভের সময় ফেসবুক ব্যবহার করে সংগঠিত হওয়ার অভিযোগে সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়। বর্তমানে চীনে ফেসবুকের বিকল্প হিসেবে উইচ্যাট ও ওয়েইবো ব্যবহার করা হয়। চীনের কড়া ‘গ্রেট ফায়ারওয়াল’ নীতির অধীনে অনেক পশ্চিমা প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মই নিষিদ্ধ।
ইরান
২০০৯ সালের ‘গ্রিন মুভমেন্ট’ বা সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় ইরান সরকার ফেসবুককে নিষিদ্ধ করে। এখনো দেশটিতে ফেসবুক অ্যাক্সেস করা যায় না, তবে ভিপিএন ব্যবহার করে অনেকেই এটি ব্যবহার করে থাকেন।
উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ায় ইন্টারনেট ব্যবস্থাই সাধারণ মানুষের জন্য খুব সীমিত। ২০১৬ সালে সরকারিভাবে ফেসবুক নিষিদ্ধ করা হয়। এখানে শুধু সরকারের অনুমোদিত কয়েকজন ব্যক্তিই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন।
রাশিয়া
২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ফেসবুক রাশিয়ায় নিষিদ্ধ করা হয়। রাশিয়ান সরকার অভিযোগ করে, ফেসবুক রাশিয়ান ব্যবহারকারীদের উপর ‘বৈষম্যমূলক আচরণ’ করছে এবং সেনাবাহিনী সম্পর্কিত মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে।
মিয়ানমার
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর ফেসবুককে নিষিদ্ধ করা হয়, কারণ এই প্ল্যাটফর্মে আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছিল। সামরিক জান্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কড়া নজরদারি আরোপ করে।
তুর্কমেনিস্তান
তুর্কমেনিস্তানে ইন্টারনেট ব্যবহারই নিয়ন্ত্রিত এবং সেন্সরযুক্ত। এখানে ফেসবুক সহ অনেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধ। তথ্য নিয়ন্ত্রণ এবং অনলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করার জন্য সরকারের একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ।
উগান্ডা
২০২১ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার ফেসবুক নিষিদ্ধ করে। ফেসবুকের বিরুদ্ধে সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে।
বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, তুরস্ক, সুদান এবং তাজিকিস্তান—এই দেশগুলো ফেসবুকে সময়ে সময়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। বাংলাদেশ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ফেসবুক ও টিকটকের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ‘নৈতিক অবক্ষয়’ ও ‘ভুয়া তথ্য’ ছড়ানোর অভিযোগে। ভিয়েতনাম ও তুরস্ক রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় সাময়িকভাবে ফেসবুক বন্ধ করেছে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস ও জিবি টাইমস
