ডেইজি মরিস তার পরিবারসহ ব্রিটেনের সোমারসেট অঞ্চলে ঘুরতে গিয়ে খুঁজে পায় একটি অদ্ভুত আকৃতির বিশাল কশেরুকা। তখনও তার পরিবার জানত না এই ১১ বছরের মেয়ের হাত ধরে আবিষ্কৃত হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক সরীসৃপ—‘ইকথিওটাইটান সেভারনেনসিস’ (Ichthyotitan severnensis)।
প্রাথমিকভাবে বিশালাকারের কশেরুকার সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি মজার মনে হলেও পরে ডেইজির পরিবার বিষয়টি পেশাদার জীবাশ্মবিদদের জানায়। গবেষকরা পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হন এটি এক নতুন প্রজাতির ইকথিওসরের (ichthyosaur) জীবাশ্ম, যা ছিল বিশালাকৃতির সামুদ্রিক সরীসৃপ। ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলের কাছে অবস্থিত জুরাসিক উপকূল থেকে এ আবিষ্কার ভূতত্ত্ববিদ ও জীবাশ্মবিজ্ঞানীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে।
নতুন আবিষ্কৃত এই প্রাণীর নামকরণ করা হয়েছে ইকথিওটাইটান সেভার্নেসিস যার বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায় ‘সেভার্ন নদীর দৈত্যাকার মাছ-ছুঁচো’। যারা প্রায় ২০ কোটি বছর আগে ট্রাইয়াসিক এবং জুরাসিক যুগে সমুদ্রজুড়ে আধিপত্য বিস্তার করা ইকথিওসর পরিবারের সদস্য এই জীব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রজাতির দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ২৫ মিটার (৮২ ফুট)—যা একটি ব্লু হোয়েলের কাছাকাছি। এই আবিষ্কার নিয়ে কাজ করা গবেষক দলটি বলেছে, ‘এটি শুধু নতুন একটি প্রজাতি নয়, বরং সামুদ্রিক সরীসৃপ বিবর্তনের ইতিহাসে এক বিশাল সংযোজন।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইকথিওটাইটান-এর কঙ্কাল বিশেষভাবে শক্তিশালী এবং কশেরুকাগুলো ব্যতিক্রমধর্মীভাবে বড়—যা তার দৈত্যাকার আকৃতি প্রমাণ করে। জীবাশ্মটি পাওয়া গেছে সেভার্ন নদীর তীরবর্তী লাইম রিজিস উপকূলের কাছাকাছি, যেটি ইংল্যান্ডের ডরসেট ও ডেভনের মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত এবং জুরাসিক কোস্ট নামে বিশ্বখ্যাত। এটি একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট, যেখানে অনেক জুরাসিক যুগের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে আগেও।
ডেইজির মা বলেন, ‘ও শুধু সাগরের পাড়ে খেলা করছিল, হঠাৎই পাথরের নিচে কিছু একটা দেখে আমাদের দেখায়। আমরা তখন বুঝতেই পারিনি বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ হবে!’ ডেইজির এই আবিষ্কার ইতোমধ্যেই স্কুল, বিজ্ঞান জগৎ ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উৎসাহের সৃষ্টি করেছে।
সূত্র: আর্থ ডট কম ও ওয়ান প্লাস জার্নাল
