হ্রদের দূষিত পানি পান করে জিম্বাবুয়েতে চারটি সাদা গন্ডারের মৃত্যু হয়েছে। একই কারণে আফ্রিকার এই দেশটিতে গত কয়েক সপ্তাহে তিনি জেব্রা, চারটি হরিণ, চারটি মেছো ঈগল, ছাগলসহ বেশ কয়েকটি গবাদি পশুও মারা গেছে। যে হ্রদের পানি পান করে পশুগুলোর মৃত্যুর হয়েছে সেই চিভেরো হ্রদ দিয়েই জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেতে পানি সরবরাহ করা হয়।

আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ের রাজধানী থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে জিম পার্কে ঘুরে বেড়াচ্ছে গন্ডারের দল, ছবি: ইনকয়ারার প্লাস
বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র জিমপার্কের মুখপাত্র তিনাসি ফারাইও জানান, এই পানি দূষণের কারণ সাইনো ব্যাকটেরিয়া। চিভেরো হ্রদের দূষণ বেড়েই চলছে। হারারে সিটি কাউন্সিল ময়লাগুলো প্রক্রিয়াজাত না করেই নর্দমায় ফেলে দেয়। পরে তা সরাসরি লেকের পানিতে মিশে যাচ্ছে। ময়লা-আবর্জনা একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানিতে ফেলার নিয়ম অনুসরণ করছে না সিটি কাউন্সিল।

দূষণের কারণে জিম্বাবুয়ের লেক চিভেরোর তীরে সারি সারি মৃত মাছ, ছবি: ভয়েস অব আমেরিকা
জীবিত গন্ডারগুলো যাতে আর মৃত্যুর কবলে না পড়ে তাই সেগুলোকে দূষণের হাত থেকে সুরক্ষার জন্য চিভেরো লেক থেকে জিমপার্কে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত সাদা ও কালো গন্ডারের সংখ্যা প্রকাশ করেনি। গন্ডারগুলো দেশটির গেম রিজার্ভে রাখা হয়েছে। এখানে রাখার কারণ চোরা কারবারিরা যাতে তাদের পাচার করতে না পারে।
গবাদি পশুর মৃত্যু ঝুঁকি কমানোর জন্য পার্কের চারপাশে বিশেষ ধরনের বেষ্টনি দেওয়া হয়েছে। একই সাথে কৃত্রিম পানির পয়েন্ট স্থাপন করে লেকের দূষিত পানি পান করা থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা করেছে বণ্যপ্রাণী কর্তৃপক্ষ। তবে কৃত্রিম পানির লাইন থেকে পানি সরবাহের পরিমাণ যথেষ্ঠ না হওয়ায় প্রাণীগুলো তাদের পানির তৃষ্ণা মেটাতে পারবে না বলেও জানায় সংস্থটি।

হারারেতে পানি সরবরাহকারী চিভেরো হ্রদের দূষণ বেড়েই চলছে, ছবি: ফ্রিপিক
দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনজারভেশন অব দ্য নেচার অথরিটির তালিকায় সাদা গন্ডার ‘প্রায় বিপন্ন’ প্রাণী। উনিশ শতকের দিকে মানুষের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই প্রজাতির প্রাণীগুলো বিপন্নের হুমকির মুখে পড়ে। যার ধারাবাহিকতা এখনো চলমান রয়েছে। নানান কারণে এসব প্রাণী বিপন্নের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে।
সংস্থাটির হিসেব মতে, বর্তমানে আফ্রিকায় ১০ হাজার ৮০টি সাদা গন্ডার রয়েছে। এছাড়া কালো গন্ডার বিপন্নের একেবারেই ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় রয়েছে। গোটা বিশ্বে মাত্র ৩ হাজার ১৪০টি কালো গন্ডার রয়েছে। ২০১৭ সালে ৪৯৬টি সাদা আর ৩৭৪টি কালো গন্ডারের তথ্য পাওয়া যায়। ১৯৭০ সালের দিকে জিম্বাবুয়ের এই জিমপার্কে সাদা-কালো মিলিয়ে ৩ হাজার ৫০০ গন্ডার ছিল।
তথ্যসূত্র: গালফ নিউজ