Home সর্বশেষ লো ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করবে যেসব খাবার

লো ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করবে যেসব খাবার

নিজস্ব প্রতিবেদক
৯৮ views

হাই ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে সচেতনতা প্রায় সবারই আছে। কারণ এটি একটি পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা এবং ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। কিন্তু লো ব্লাড প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপের বিষয়ে আমরা উদাসীন। এটি এমন একটি সমস্যা, যা সাধারণত হালকাভাবে নেওয়া হয়। তবে এর প্রভাব কিন্তু অত্যন্ত গুরুতর হতে পারে। যখন শরীরের রক্তচাপ প্রয়োজনীয় মাত্রার নিচে চলে যায়, তখন মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, অজ্ঞান হয়ে পড়া, এমনকি হৃদযন্ত্রের সমস্যা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।

লো ব্লাড প্রেশার অদৃশ্য শত্রুর মতো আমাদের জীবনে মিশে থাকে। যদি সময় মতো এর মোকাবিলা করা না হয় তাহলে জীবন নাশের কারণ হতে পারে এটি। তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং কিছু পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে আমরা সহজেই এই সমস্যা মোকাবিলা করতে পারি। আসুন, জেনে নিই এমন কিছু খাদ্য উপাদান সম্পর্কে, যা রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করবে এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ ও শক্তিশালী করে।

লো ব্লাড প্রেশার বা হাইপোটেনশন কী?

মানবদেহের রক্তচাপ স্বাভাবিক রক্তচাপের চেয়ে কমে গেলে সেটাকে লো ব্লাড প্রেশার বলে। মানবদেহের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি। এই চাপের মাত্রা ৯০/৬০ মিলিমিটার মার্কারির নিচে চলে এলে তা লো ব্লাড প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ। এটি শরীরের জন্য বিপদজনক হতে পারে। কারণ, এতে মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড ও অন্যান্য অঙ্গের পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়, যা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই, লো ব্লাড প্রেশার একটি গুরুতর রোগ হওয়া সত্ত্বেও অনেক সময় আমরা এর গুরুত্ব বুঝে উঠতে পারি না।

লো ব্লাড প্রেশারের প্রভাব

লো ব্লাড প্রেশার দীর্ঘ সময় অবহেলা করলে শারীরিক দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, স্নায়বিক সমস্যাসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া এটি কখনও কখনও হৃদপিণ্ডের সমস্যা বা স্ট্রোকের মতো মারাত্মক সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে। তাই এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লো ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে সহায়ক খাবার

লো ব্লাড প্রেশার কেবলমাত্র নিয়মিত পর্যালোচনা, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং কিছু খাবারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ডায়েটে কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। কিছু খাবার এই সমস্যায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। চলুন জানি, এমন কিছু খাবারের কথা যেগুলো লো ব্লাড প্রেশারের রোগীদের জন্য উপকারী-

বিটরুট

বিটরুট হলো এমন একটি সবজি যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষভাবে সাহায্য করে। বিটরুটে রয়েছে নাইট্রিক অক্সাইড, যা রক্তনালীগুলিকে স্ফীত ও রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে। ফলে রক্তচাপ স্বাভাবিক হতে সহায়ক হয়। বিটরুটের জুস খাওয়ার মাধ্যমে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

কিশমিশ

কিশমিশ এমন একটি ড্রাই ফ্রুট, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে ডায়াবেটিস থাকলে কিশমিশের অতিরিক্ত ব্যবহার এড়ানো উচিত, কারণ এতে চিনির পরিমাণ একটু বেশি থাকে। কিশমিশ পানিতে ভিজিয়ে খেলে আরও বেশি উপকার পাওয়া যায়।

 

webp 8

লো ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে সহায়ক খাবার কিশমিশ, ছবি: ফ্রিপিক

 

আমন্ড (কাঠবাদাম)

আমন্ড বা কাঠবাদাম একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার, যা শরীরের জন্য উপকারী ফ্যাট, ম্যাগনেশিয়াম, ও অন্যান্য খনিজ উপাদানে ভরপুর। আমন্ডে থাকা ম্যাগনেশিয়াম লো ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন ৫-১০টি আমন্ড খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

ডার্ক চকোলেট

ডার্ক চকোলেট লো ব্লাড প্রেশারের রোগীদের জন্য একটি ভালো উপায় হতে পারে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তবে নিম্নমানের চকোলেট না খেয়ে উচ্চমানের ডার্ক চকোলেট খাওয়া উচিত, যাতে শরীরের জন্য উপকারী উপাদানগুলো পাওয়া যায়।

ব্রাউন রাইস

সাদা ভাতের পরিবর্তে ব্রাউন রাইস খাওয়া উচিত। ব্রাউন রাইসে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এর সাথে, মাঝে মাঝে রেড মিট যেমন খাসির গোস্ত খেলে আয়রনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর।

লো ব্লাড প্রেশার যদিও অনেক সময় উপেক্ষিত হয়, তবে এটি একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে যদি এটি দীর্ঘকাল অবহেলা করা হয়। তাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত চেকআপ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। যদি কারও লো ব্লাড প্রেশারের সমস্যা থাকে, তবে উপরের খাবারগুলো নিয়মিত খেলে রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করবে।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ