প্রতিদিন সকালের নাস্তায় এই খাবার খেলে প্রাণঘাতী অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই হ্রাস করা যায়। জাস্টিন স্টেবিং, বায়োমেডিকেল সায়েন্সেসের অধ্যাপক, অ্যাংলিয়া রাস্কিন বিশ্ববিদ্যালয় দ্য কনভার্সেশন ওয়েবসাইটে লিখেছেন, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে সকালের নাস্তায় নিয়মিত এ খাবারটি ক্যান্সারের বিকাশের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব ফেলতে পারে। পুষ্টিগুণে ভরপুর ক্যান্সার প্রতিরোধী খাবার হলো ওটস ও দই।
ওনকোলজি বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত সকালের নাস্তা না খাওয়া দেহের মেটাবলিজমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি ইনসুলিন প্রতিরোধ, প্রদাহ এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে, যা ক্যান্সার সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার, কোলোরেক্টাল ক্যান্সার এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের সঙ্গে এর সম্পর্ক পাওয়া গেছে।
অনকোলজি বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিনের সকালের খাবারে ওটস অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন, যা কোলন ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে। ওটস এক ধরনের সম্পূর্ণ শস্য, যা ফাইবার, বিশেষ করে বিটা-গ্লুকান নামক দ্রবণীয় ফাইবারে সমৃদ্ধ। এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে সহায়তা করে। এছাড়াও ওটস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, এবং খনিজ উপাদানে পরিপূর্ণ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
বাওয়েল ক্যান্সার, যা কোলন বা রেকটাল ক্যান্সার নামেও পরিচিত, বিশ্বব্যাপী একটি সাধারণ এবং মারাত্মক রোগ। গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্যাভ্যাস এই ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ওটসের ফাইবার হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে, যা কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়ক হতে পারে।

নিয়মিত দই খেলে কমে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি, ছবি: ফ্রিপিক
নিয়মিত দই খাওয়ার ফলে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম, অন্ত্রে বসবাসকারী প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া পরিবর্তন করে কিছু আক্রমণাত্মক ধরণের কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব পড়তে পারে।
অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, হজম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকিকেও প্রভাবিত করে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে সপ্তাহে দুই বা ততোধিক বার দই খেলে নির্দিষ্ট ধরণের আক্রমণাত্মক কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কম থাকে। এটি সাধারণত কোলনের ডান দিকে ঘটে এবং বাম দিকের ক্যান্সারের তুলনায় বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম থাকে।
পুষ্টি বিজ্ঞানী অধ্যাপক টিম স্পেক্টর বলেন, তিনি ‘সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন’ দই খান কারণ এটি একটি সুস্থ অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের জন্য আদর্শ – যা হজমে সহায়তা করতে পারে এবং আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী রাখতে পারে।
সূত্র: সারেলাইভ ও দ্য কনভার্সেশন