অনলাইনে ওজন কমানোর ওষুধ কেনার ধুম পড়েছে ইংল্যান্ডে। ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই শুধু ফটো বা গুটি কয়েক প্রশ্নের উত্তর দিয়েই অনলাইনে ফার্মেসীগুলো থেকে এই ওষুধ সংগ্রহ করতে পারেন ব্রিটিশরা। এমন ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে দেশটির দ্য জেনারেল ফার্মাসিটিক্যাল কাউন্সিল (জিপিএইচসি)। সঙ্গে ওষুধ কেনায় কড়াকড়ি আরোপ করেছে সংস্থাটি।
ওষুধ বিক্রয়ের বৃহৎ জরিপকারী সংস্থা সিম্পল অনলাইন ফার্মেসী বলছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অনলাইনে ওজন কমানোর ওষুধ কেনার চাহিদা বেড়েছে আকাশচুম্বী। আনুমানিক প্রায় পাঁচ লাখ ব্রিটিশ নাগরিক ওজন কমাতে ইনজেকশন নিয়েছেন। বিশেষ করে উইগোভি ও মৌঞ্জারোর মতো ইনজেকশনের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি।
যাদের ইটিং (খাওয়া) ডিসওডার আছে তাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ গ্রহণ করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে জিপিএইচসি। তাই সংস্থাটি বলছে, অনলাইনে শুধু রোগীর প্রশ্নোত্তর বা ফটো দেখে এখন থেকে আর কোনো ফার্মেসী এই ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না। বরং রোগীর কাছে ওষুধ বিক্রি করতে হলে দুইটি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে ফার্মেসীগুলো।
অনলাইনে ওজন কমানোর ওষুধ কেনার ধুম পড়েছে ইংল্যান্ডে, ছবি: কেম্যান হেলথ
প্রথমত, ওষুধ বিক্রেতাদের অনলাইনে ওর্ডার দেওয়া ব্যক্তির বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) বা ওজন ও উচ্চতা যাচাই করতে হবে। এ জন্য ক্রেতার সঙ্গে ভিডিও কলে আলোচনা করবে বিক্রেতা। আর দ্বিতীয় পন্থাটি হচ্ছে-ক্রেতাকে সরাসরি ফার্মেসীতে আসতে হবে। সঙ্গে লাগবে মেডিক্যাল কাগজপত্র (রিপোর্ট)।
এ ব্যাপারে জিপিএইচসির প্রধান নির্বাহী ডানকান রুডকিন জানান, ওজন কমানোর ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে এই নির্দেশনা মেনে চলতে হবে সব নাগরিকের। তাই ওষুধ সরবরাহের আগে ক্রেতাদের সঙ্গে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা যাছাইয়ের পাশাপাশি ক্রেতাদের সঙ্গে ভিডিও কলে আলোচনা করবে সংশ্লিষ্ট ফার্মেসী। রোগীর সবকিছু দেখে নিরাপদ মনে করলেই কেবল ওষুধ বিক্রি করবে।
তিনি আরও জানান, আমরা জানি ফার্মেসীগুলো খুবই মূল্যবান সেবা প্রদান করে। কিন্তু আমরা তদন্তের পর জানতে পেরেছি। অনলাইনে অনেক সময় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই ওষুধ পাঠানো হচ্ছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই নির্দেশনা বরং ফার্মেসীর অনলাইন গ্রাহকদের সুরক্ষা দেবে।
উল্লেখ্য, ডায়বেটিকসে আক্রান্ত রোগীদের ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ইংল্যান্ডের চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্রে উইগোভি ও মৌঞ্জারো ইনজেকশন লিখে থাকেন। কিন্তু গত দুই-তিন বছর ধরে এই ইনজেকশন ব্যবহৃত হচ্ছে ওজন কমানোর ওষুধ হিসেবে।
সূত্র: ম্যানচেস্টার ইভিনিং নিউজ ও বিবিসি
