Home স্বাস্থ্য বিছানাবন্দি রোগ ‘ডিসেনিয়া’

বিছানাবন্দি রোগ ‘ডিসেনিয়া’

ফাহমিদা বৃষ্টি
২৭১ views

ঘড়ির অ্যালার্মে ঘুম ভেঙ্গেছে সকাল ৭টায়। কিন্তু উঠতে উঠতে সকাল সাড়ে ৮টা। মাঝের সময়টুকু বিছানায় গড়াগড়ি করেই কাটিয়ে দেওয়া। হাজার ইচ্ছা বা তাড়া থাকা সত্ত্বেও বিছানা থেকে ওঠা হয় না। পরিপূর্ণ ঘুমের পরও ক্লান্ত লাগে। মনে হয়, কোনো এক অদৃশ্য শক্তি বিছানায় কব্জা করে রেখেছে। আমাদের আশপাশে অনেকেই আছেন যাদের সময়মতো ঘুম ভাঙ্গার পরও বিছানা ছেড়ে উঠতে প্রতিদিনই এমন যুদ্ধ করতে হয়। বিষয়টিকে নিছক অলসতা হিসেবে উড়িয়ে দিলেও এটি আমাদের সাধারণ ক্লান্তিভাব থেকে বেশ ভিন্ন। এটি হতে পারে ‘ডিসেনিয়া’র লক্ষণ।

‘ডিসেনিয়া’ মূলত এক প্রকার ঘুমের জড়তা যাতে ঘুম থেকে উঠে বহু চেষ্টার পরও বিছানা ছেড়ে উঠতে মন চায় না। এজন্য এর আরেক নাম ‘ক্লাইনোমেনিয়া’ বা বিছানাসক্তি। যারা এতে আক্রান্ত তাদের স্বভাবতই ঘুমের পর মানসিক ও শারীরিকভাবে নিজেকে স্থির করতে বেগ পেতে হয়।

কেন হয়?

অনেক কারণে ডিসেনিয়া হতে পারে। যেমন-  

স্লিপ ডিসঅর্ডার

অনিদ্রা, স্লিপ অ্যাপনিয়া বা রেস্টলেস লেগ সিনড্রোমের মতো স্লিপ ডিসঅর্ডারের কারণে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এজন্য সকালে ঘুম থেকে উঠতে ক্লান্তিবোধ হয়, বিছানা ছেড়ে ওঠা বেশ কষ্টকর হয়ে যায়। 

মানসিক সমস্যা

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন- বিষণ্নতা, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD) বা উদ্বেগ, অপ্রতিরোধ্য ক্লান্তিবোধ এবং মোটিভেশন বা প্রেরণার অভাবের কারণে বিছানা থেকে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ে।

WEB 695 Understanding Dysania Be

মানসিক সমস্যা থাকলে ডিসেনিয়া হতে পারে।
ছবিঃ পিলো অ্যাপ

স্ট্রেস

আমাদের ব্যস্ত জীবনে স্ট্রেস খুব সাধারণ একটি ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতিমাত্রায় স্ট্রেসের কারণে ঘুমের যেমন ব্যাঘাত ঘটে তেমনই পরিপূর্ণ ঘুম হওয়ার পরও শরীর ক্লান্তিবোধ করতে পারে। এজন্য ডিসেনিয়া হতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা

কিছু অসুস্থতা বা দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক ব্যাধি যেমন, অ্যানিমিয়া, থাইরয়েড, হৃদরোগের কারণে ঘুমের পর শরীরে চরম ক্লান্তি ভর করতে পারে। যা জেগে ওঠাকে চ্যালেঞ্জিং করে তোলে।

চিকিৎসা

ডিসেনিয়াকে এখন পর্যন্ত কোনো ডিসঅর্ডার হিসেবে চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তবে ইতিমধ্যে এটি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। এমন সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। পাশাপাশি জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে। যেমন- একটি রুটিন মেনে চলা। এমনভাবে রুটিন তৈরি করতে হবে যেন ডায়েট, ঘুম, কাজ- কোনোকিছুই আপনার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে। শুধুমাত্র ঘুমের সময় ছাড়া বিছানা অন্য কোনো কাজে ব্যবহার না করা। শরীরে এনার্জি ধরে রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং শরীরচর্চার দিকে মনোযোগী হতে হবে।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ