রাজধানীর কারওয়ান বাজার মানেই সবধরনের নিত্যপণ্যের পাইকারি ও খুচরা বেচাকেনা। এর বাইরেও বাজারটির আলাদা একটা পরিচয় রয়েছে। সন্ধ্যার পর এখানে সবজি, চাল, ডাল ও তেল ছাড়াও বিক্রি হয় পোশাক, জুতা, চুড়িসহ অন্যান্য জিনিসপত্র। ঈদ উপলক্ষ্যে জমে উঠেছে এই বাজার।
বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা বিভিন্ন সাইজের জিন্সের প্যান্ট, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
মধ্যরাত থেকে সারাদিন আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতারা বিভিন্ন নিত্যপণ্য বিক্রি করে ক্রেতার কাছে। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনে এখানে। তবে বিকেল থেকে একটু একটু করে বদলাতে থাকে এর চিত্র। আর সন্ধ্যার পর রাজকীয় না হলেও চার্জ লাইটের চোখধাঁধানো আলোয় জমে উঠে এই বাজার। বিক্রি হয় প্যান্ট, শার্ট, লুঙ্গি, বিছানার চাদর, পর্দা, টি-শার্ট, শিশুদের পোশাক, বড়দের জুতা থেকে শুরু করে আরও নানা রকম জিনিস।
অস্থায়ী দোকানে পোশাকের পসরা, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
৫০ বছর বয়সী ছাদেকুর হোসেন অনেক বছর ধরে ব্যবসা করেন। সঙ্গে সহযোগী হিসেবে রয়েছে তার ছেলে। শুধু জিন্সের প্যান্ট বিক্রি করেন তিনি। দামও সাধ্যের মধ্যে। তিনশ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত প্যান্ট রয়েছে তার দোকানে। হ্যালো বাংলাদেশকে তিনি জানান, দুপুর ২টার পর দোকান সাজিয়ে বসি, থাকি রাত পর্যন্ত। ঈদে ক্রেতার চাপ বেশি থাকায় মধ্যরাত পর্যন্ত দোকান খোলা রাখি।
চার্জ লাইটের আলোয় পছন্দের বেল্ট কিনছেন ক্রেতা, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
তিনি আরও জানান, আমাদের এখানে কাস্টমার (ক্রেতা) আসে মূলত সন্ধ্যার পর। সে হিসেবে সারাবছরই মোটামুটি ব্যবসা হয়। তবে ঈদের সময় ক্রেতার চাপ থাকে খুব বেশি। তাই প্যান্ট বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় একটু লাভের মুখ দেখি। আর সবধরনের মানুষই আমাদের দোকান থেকে প্যান্ট কেনে।
সাজিয়ে রাখা নানা সাইজের জুতা, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
সবজি বা আলু নয়, থরে থরে সাজানো জুতা। সব সাইজের জুতা রয়েছে। এখানে ক্রেতারা দরদাম করে কেনেন পছন্দের জুতা। রাজধানীর মহাখালি থেকে ইমদাদুল নামের একজন আসেন জুতা কিনতে। তিনি হ্যালো বাংলাদেশকে জানান, মূলত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখলেও জুতার মান বেশ ভাল। গত বছরও এখান থেকে জুতা কিনেছি। ভালো হওয়ায় এবারও এসেছি।
বিভিন্ন টুপি নিয়ে বসে আছেন এক বিক্রেতা, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
সব বয়সের মানুষেরই জুতা পাওয়া যায় এই বাজারে। শুধু সময় নিয়ে নিজের পছন্দের জুতা খুঁজে বের করতে হয় ক্রেতাকে। তবে সাইজের কোনো সমস্যা নেই। দরদাম শেষে পছন্দ হলে পায়ের সাইজ অনুযায়ী জুতা ঠিক ম্যানেজ করে দেয় বিক্রেতা। ১০০ টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকা দামের জুতা আছে এই বাজারে।
পছন্দের চুড়ি কিনছেন এক নারী, ছবি: হ্যালো বাংলাদেশ
শুধু পুরুষের নয়, নারীদের জুতা, পোশাকসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যও পাওয়া যায় এখানে। নিজেদের জন্য চুড়ি কিনতে আসা দুই নারী জানান, আমারা এসেছি চুড়ি কিনতে। দিনের বেলায় এই বাজার বসে না। তাই এ সময় আসা। ঈদের জন্য চুড়ি কিনতে এসেছি। এরপর কসমেটিকস কিনব।
