ছেলেবেলা থেকে একই ধরনের গল্প সবাই পড়ে বড় হয়। যেমন ধরা যাক, ‘নামে কী-বা আসে যায়’, ‘ডোন্ট জাজ আ বুক বাই ইটস কভার’ বা ‘সাইজ ডাজ নট ম্যাটার চপিং উড’। তারপরও মানুষকে কখনও পরিচয় করানো হয় তার ত্বকের রং দিয়ে, কখনও কলেবর দিয়ে, আবার কখনও চেহারার ভিন্নতা দিয়ে। বহুদিন ধরে এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চললেও বিষয়টি খুব বেশি বদলে যায়নি।
এমনই একটি গল্পে বড় পর্দায় অভিনয় করেছেন কারিনা কায়সার। কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কারিনা বেশ জনপ্রিয় তার ভক্তদের কাছে। তার হুটহাট মজা করে যেকোনো বিষয় সামনে নিয়ে আসার ক্রিয়েটিভিটি সবাই পছন্দ করেন। সেই সীমানা থেকে বের হয়ে চেকমেট করলেন এবার পর্দায়।
সম্প্রতি কারিনা কায়সার অভিনীত ৩৬-২৪-৩৬ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে প্রেক্ষাগৃহে। আর চেকমেট প্রসঙ্গে বলতেই হয় রানী হামিদের কথা। বাংলাদেশের দাবা কিংবদন্তি রানী হামিদের নাতনি কারিনা কায়সার। বাবা ফুটবলার কায়সার হামিদ। খেলাধুলার মাঠ ছেড়ে সোজা রূপালি পর্দায় হাজির কারিনা।
ছোট পর্দা তো ছোটই বটে, একেবারে সেলফোনের পর্দা থেকে বের হয়ে বড় পর্দায় গোল করার বিষয়টি নিয়ে কারিনা কায়সার ‘হ্যালো বাংলাদেশ’কে বলেন, বিষয়টা এখনও স্বপ্নের মতো। আমি এখনও ভাবতেই পারছি না সিনেমায় অভিনয় করে ফেলেছি, সেটা মুক্তিও পেয়ে গেছে।
কারিনা জানান, সিনেমা তো দূরে, তিনি অভিনয় করবেন সেটাই ভাবেননি। এরপর গল্পটি পড়ে নিজের সাথে, নিজের জীবনের সাথে মিল খুঁজে পেয়ে বা নিজের মতো অন্য কারও জীবনের সাথে মিল থাকতে পারে ভেবে তিনি সিনেমাটির অংশ হওয়ার কথা বিবেচনা করেন। পরিচালক রেজাউর রহমানকেও ধন্যবাদ দিতে চান এমন একটি গল্পকে নির্বাচন করার জন্য, যা কিনা বাংলাদেশের মেয়েদের জীবনে কোনো না কোনোভাবে পরিচিত বা মেয়েদের গল্প বলবে।
কারিনা জানান, তার এই বড় পর্দায় আসায় সবচেয়ে খুশি সম্ভবত তার মা লোপা কায়সার ও বাবা কায়সার হামিদ। ছবিটির বিশেষ প্রদর্শনিতে তারা দুজনই সবার আগে উপস্থিত হয়েছিলেন বলে জানান কারিনা। কারিনার মা লোপা কায়সার একজন শিক্ষক। পড়াচ্ছেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
মায়ের ব্যাপারে বেশ মজা করেই কারিনা বলেন, মা আমার পরীক্ষায় সময় না থাকলে আমার সেই পরীক্ষা কখনো ভালো হয় না। আমার মা সবসময় আমার হলের বাইরে বসে দোয়া ইউনূস পড়েন আর আমার পরীক্ষা ভালো হয়। এটিও আমার কাছে পরীক্ষা, আমার বিশ্বাস মা দোয়া পড়ছেন।
স্বভাবসুলভ ভঙ্গীমায় হেসে কারিনা বলেন, একবার মা আমার পরীক্ষার সময় ছিলেন না। সে পরীক্ষায় আমি ডাব্বা মেরেছিলাম। তাই আজকে যদি এই সিনেমা আপনাদের ভালো না লাগে বুঝবেন আম্মু ঠিক মতো দোয়া করেনি।
উল্লেখ্য, রেজাউর রহমান, কারিনা কায়সার ও মোনতাসির মান্নানের রচনায় ৩৬-২৪-৩৬ সিনেমাটির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, সৈয়দ জামান শাওন ও কারিনা কায়সার। এর আগে কারিনার লেখা গল্প ও চিত্রনাট্যে ছয় পর্বের ‘ইন্টার্নশিপ’ প্রচারিত হয়েছে অনলাইন প্লাটফর্মে।
