দাফন না সৎকার— সদ্যপ্রয়াত গায়ক মনি কিশোরের মরদেহ উদ্ধারের পর এই প্রশ্ন সামনে আসে। তিনি বৈবাহিকসূত্রে ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেও প্রশাসনের কাছে বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রমাণ ছিল না। ফলে ধর্মীয় অনুভূতির ওপর শ্রদ্ধা রেখে প্রমাণের অপেক্ষায় ছিল প্রশাসন ও অন্যরা। ফলে তার মরদেহ রয়ে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গেই। অবশেষে তিনদিন পর অবসান হলো সেই জটিলতার।
আজ বৃহস্পতিবার গায়কের মরদেহ দাফন করা হবে বলে জানা গেছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন গীতিকার মিল্টন খন্দকার। তিনি বুধবার বলেন, মনি কিশোরের মেয়ে নিন্তী চৌধুরী সরকারিভাবে একটি কাগজ পাঠিয়েছেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে থানা কর্তৃপক্ষ কাগজটি পেয়ে যাবে। পেতে পেতে হয়তো রাত হয়ে যাবে। রাতে তো আর দাফন সম্ভব নয়। আশা করছি বৃহস্পতিবার জোহরবাদ তার নামাজে জানাযা ও দাফন হবে।
মনি কিশোরের দাফনের স্থান নিয়ে মিল্টন বলেন, ইতিপূর্বে মনি কিশোরের মরদেহ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফনের কথা প্রচার করা হচ্ছিল। এটি আসলে ভুল তথ্য ছিল। মনি কিশোরের ভাই এটি ভুল করে বলেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, দাফনের জন্য প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্থানের কথা ভাবা হয়েছিল। সেখানে অনেক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে বলে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি। রামপুরা অথবা বনশ্রীর কোনো একটি গোরস্থানে তাকে দাফন করতে চাই।
১৯ অক্টোবর রাতে রাজধানীর রামপুরার নিজ বাসা থেকে মনি কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গায়কের যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মেয়ে দেশে আসবেন নাকি আসবেন না— তা নিয়েও কথা উঠছিল। পাশাপাশি দাফন নাকি সৎকার— তা নিয়েও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল।
নব্বই দশক থেকেই গান গেয়ে শ্রোতাদের মন মাতিয়েছেন মনি কিশোর। তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘কী ছিলে আমার’, ‘সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার’, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য’, ‘মুখে বলো ভালোবাসি’, ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তার সবচেয়ে শ্রোতাপ্রিয় গান ‘কী ছিলে আমার’ তারই সুর করা ও লেখা। মাঝখানে দীর্ঘদিন নতুন গান প্রকাশ থেকে দূরে ছিলেন এই গায়ক। পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন মনি কিশোর। রেডিও-টিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হলেও গান গেয়েছেন অল্প। সিনেমায়ও তেমন গাননি। মূলত অডিওতে চুটিয়ে কাজ করেছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা বাবার সাত সন্তানের মধ্যে মনি কিশোর চতুর্থ সন্তান। নড়াইল জেলার লক্ষীপুরে মামাবাড়িতে ১৯৬১ সালের ৯ জানুয়ারি জন্ম মনি কিশোরের।