ভারতের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের শিল্পীদের ‘বয়কট’ করেছে বলিউড। দেশটির অভিনেতা, গায়ক-গায়িকা, শিল্পী বা কলাকুশলীদের সঙ্গে মুম্বাইয়ের প্রযোজক পরিচালকদের কাজ করার উপর ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি করেছেন মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রধান সংগঠন দি ফেডারেশন অব ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজ (এফডব্লিউআইসিই)। এবারই প্রথম নয়, এর আগেও পাকিস্তানি শিল্পীদের বয়কট করার ইতিহাস রয়েছে।
বয়কট প্রসঙ্গে সংগঠনের সভাপতি অশোক দুবে বলেছেন, আমাদের কাছে দেশ আগে। বারবার আমাদের দেশের উপর আক্রমণ হানা হচ্ছে। সম্প্রতি পহেলগামেও জঙ্গি হামলা হয়েছে। সেই বিষয়ে আমরা আবারও একটি বিবৃতি জারি করে নির্দেশ দিয়েছি, ভবিষ্যতে যদি আমাদের শোবিজের কোনো সদস্যকে পাকিস্তানি শিল্পী বা কলাকুশলীর সঙ্গে কাজ করতে দেখি, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেব এবং তাদের সঙ্গে কাজ করা বন্ধ করে দেব।’
এফডব্লিউআইসিই-র বয়কট মানে মুম্বাইয়ের বিনোদন জগতে কার্যতআর পা রাখতেই পারবেন না কোনও পাকিস্তানি অভিনেতা, গায়ক-গায়িকা বা কলাকুশলী। কারণ, বলিউডের সিনেমা, টিভি, মিউজিক, বিজ্ঞাপন সমেত যাবতীয় ক্ষেত্রের প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী, কলকুশলীদের ২০টিরও বেশি সংগঠনের মাদার অফ সংগঠন এফডব্লিউআইসিই।
বিনোদন জগতের যারা কাজ করেন, তারাই এই ২০টির মধ্যে কোনও না কোনও সংগঠনের সদস্য। আর এই সব ক’টি সংগঠনের নিয়ন্ত্রক এফডব্লিউআইসিই। সব মিলিয়ে এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ৫ লাখেরও বেশি। এফডব্লিউআইসিই কারও উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা মানে, তার জন্য বলিউডের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়া।
উরি হামলার পরেও নানা ভাবে প্রতিবাদ করেছিল বলিউড। পুলওয়ামা হামলার পর একই পথে হাঁটে বলি পাড়া। এবার পাকিস্তানের কার্যকলাপে বেজায় ক্ষুব্ধ ফিল্ম ফেডারেশেন অ্যান্ড টেলিভিশন ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অশোক পণ্ডিত। এরই মধ্যে সংগঠনটি হুমকি দিয়েছে, কেউ যেন পাক শিল্পীদের সিনেমায় না নেয়।
এদিকে ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সূত্র ধরে ২০০৫ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে বলিউড সিনেমা নিষিদ্ধ ছিল। ওই সময় পাকিস্তানের কয়েকশ সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যায়, রূপান্তরিত হয় শপিং মল বা ওয়েডিং হলে। ১৯৯০ এর দশকে পাকিস্তানি সিনেমা শিল্পের মরণদশায় উপনীত হয়। চলতি বছর ভারত হামলার পর আগের মতোই বলিউডের সিনেমা নিষিদ্ধ করেছে পাকিস্তান। উল্লেখ্য, গত মাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ২৬ পর্যটক। এটি ২০১৯ সালের পর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সবচেয়ে মারাত্মক হামলার ঘটনা।
সূত্র: এনডিটিভি, কাশ্মির টাইমস ও এএনআই