অস্ট্রেলিয়ায় প্রথমবারের মতো থ্রিডি প্রিন্টেড প্রযুক্তিতে নির্মিত হচ্ছে একটি বহুতল ভবন। দেশটির মেলবোর্নের পশ্চিমে উইন্ডহ্যাম শহরে এই বিল্ডিং নির্মাণ করছে কন্ট্রাকশন কোম্পানি লুইটেন। মজার ব্যাপার হলো-প্রথাগত বিল্ডিং নির্মাণে কমপক্ষে সময় লাগে নয় মাস থেকে এক বছর। অথচ এই প্রযুক্তিতে ভবনটি নির্মাণে সময় লাগবে মাত্র পাঁচ সপ্তাহ।
চার বেডের বহুতল ভবনটি বিক্রির জন্য নির্মাণ করছে না লুইটেন। বরং কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহমেদ মাহিল থাকবেন এখানে। এ ব্যাপারে মেলবোর্ন ভিত্তিক কোম্পানিটির সিইও জানান, এটি বিক্রির জন্য নয় বরং এখানে থাকব আমি। ভবনটি নির্মাণের পেছনে যে বিজ্ঞান রয়েছে আমি তা বিশ্বাস করি।
জায়ান্ট রোবটিক ক্রেনে নির্মাণ চলছে বহুতল ভবনের, ছবি: গার্ডিয়ান
অস্ট্রেলিয়াজুড়ে ঘরবাড়ি বা ভবন নির্মাণে শ্লথ গতি গত ১৫ বছর ধরেই আলোচনার একটি বড় ইস্যু। কারণ দেশটি যথেষ্ট বিল্ডিং বা ভবন নেই। দ্রুত বাড়ি বা ভবন নির্মাণে থ্রিডি প্রিন্টেড হোম প্রযুক্তিকে বড় সমাধান হিসেবে দেখছেন আহমেদ মাহিল। তার জন্য নির্মিত হতে যাওয়া বাড়িটি থ্রিডি প্রযুক্তিতে সম্পন্ন হবে মাত্র পাঁচ সপ্তাহে।
ভবনটিতে থাকবে চারটি বেডরুম ও পাঁচটি টয়লেট। মাহিল বলেন, যদিও এই প্রযুক্তিতে ভবনটির নির্মাণ শেষ হবে তিন সপ্তাহে। আর বাকি দুই সপ্তাহ ভবনের রঙ, লাইটিং এবং অন্যান্য কাজের জন্য লাগবে।
এআই দিয়ে বাড়ির নকশা তৈরির পর জায়ান্ট রোবটিক ক্রেনের মাধ্যমে অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে কম সময়ে নির্মাণ করা হয় থ্রিডি প্রিন্টেড হোম বা বাড়ি। এই প্রযুক্তিতে খরচ ও শ্রমিক কম লাগার পাশাপাশি অবকাঠামো বর্জ্যও অনেক স্বল্প হয়।
মাস্টার বিল্ডার্স এসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, একটি ভবন নির্মাণে সাধারণত নয় থেকে সাড়ে ১২ মাস সময় প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে এ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করতে সময় লাগে সাড়ে ১৮ মাস থেকে সাড়ে ৩৩ মাস।
তাসমানিয়ায় এই প্রযুক্তিতে নির্মিত একটি ভবন, ছবি: তাসমানিয়ান টাইমস
এই ধরণের বাড়ি নির্মাণে তুলনামূলকভাবে খরচও কম। এ বিষয়ে লুইটেনের সিইও মাহিল জানান, প্রথাগত বিল্ডিং নির্মাণের চেয়ে ২৫ থেকে ৩০ ভাগ কম খরচে নির্মাণ কাজ শেষ করা যায় থ্রিডি প্রিন্টেড প্রযুক্তিতে। যদিও নিজের বহুতল ভবন নির্মাণে কত টাকা খরচ হচ্ছে সেটা প্রকাশ করেননি মাহিল।
দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলসে এক বেডের প্রথম থ্রিডি প্রিন্টেড হোম প্রযুক্তিতে বাড়ি তৈরি হয় ২০২৩ সালে। এই বাড়ি নির্মাণে সময় লেগেছিল মাত্র দুইদিন। এ ছাড়া দুবাইয়ে বিশ্বের প্রথম থ্রি-ডি প্রিন্ট মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান ও তাসমানিয়ান টাইমস
