Home সম্পাদকীয় ত্যাগের মহিমায় ঈদুল আজহা

ত্যাগের মহিমায় ঈদুল আজহা

হিমেল চৌধুরী
৪৪ views

ঈদুল আজহা আমাদের কাছে ‘কুরবানির ঈদ’ নামে পরচিতি। এর ইতিহাস সুপ্রাচীন। সারা বিশ্বের মুসলমানরা ১০ জিলহজ কুরবানি দিয়ে থাকেন।

আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দশ্যেে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তার প্রিয় পুত্রকে কুরবানি দিতে চেয়েছিলেন। ইব্রাহিম (আ.)-এর নিয়ত ও তা বাস্তবায়নের উদ্যোগে খুশি হয়ে তার পুত্রের বদলে আল্লাহর ইশারায় দুম্বা কুরবানি হয়। হজরত ইব্রাহিমের (আ.)-এর অসামান্য এই ত্যাগের মহিমা জাগ্রত রাখতে সারা বিশ্বের মুসলিমরা জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পশু কুরবানি করেন। ঈদুল আজহার পরের দুদিনও পশু কুরবানি করার বিধান আছে।

ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহায় আগের দিন চাঁদ দেখার বিষয় নেই। ১০ দিন আগেই ঠিক হয়ে যায় ঈদের দিনক্ষণ। সে অনুসারে পশু কেনা, নাড়ির টানে গ্রামে যাওয়াসহ ঈদের সব প্রস্তুতি আগেই সম্পন্ন করেন সবাই।

ত্যাগের মধ্যে যে আনন্দ আছে, সেটাই ঈদুল আজহার শিক্ষা। সারা বিশ্বের প্রায় প্রত্যক সার্মথ্যবান মুসলমান কোরবানি দিয়ে থাকেন। যাঁদের কোরবানি দেওয়ার সার্মথ্য নেই, কোরবানির মাংসের ওপর তাঁদেরও হক আছে। এ কারণে ধনী মুসলমানরা পশু কােরবানি করে এর নির্দিষ্ট ভাগ গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণ করেন। আর এতে করে কোনো অভাবী মানুষ যাতে বাদ না পড়ে সেদিকে সবার খেয়াল রাখা উচিত।

সৌদি আরবসহ অনেক দেশে সুরক্ষিত স্থানের বাইরে কোরবানি দেওয়া যায় না। আমাদের দেশে নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির নিয়ম চালু করলেও তা মূলত প্রচার ও মানুষের অসচেতনতার কারণে সফল হয়নি। তারপরও কোরবানির পশুর রক্ত ও অন্যান্য বর্জ্য যাতে পরিবেশ নষ্ট না হয়, সে বিষযে সবাইকে সজাগ থাকা উচিত। ঈদের সময় যে পশু কোরবানি হয়, তার বর্জ্য দ্রুত ধুয়েমুছে ফেলতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সবাই এগিয়ে আসবে—এটাই প্রত্যাশতি।

ইসলামে যে পাঁচটি অবশ্যপালনীয় বিধান আছে তার মধ্যে অন্যতম হজ। প্রত্যকে সার্মথ্যবান মুসলমানের জন্য হজ পালন করা ফরজ। আর এই হজের অন্যতম অনুষঙ্গ কোরবান। প্রতিবছরের মতো এবারও লাখ লাখ র্ধমপ্রাণ মুসলমান সৌদি আরবে পবিত্র মক্কা নগরীর আরাফাত ময়দানে সমবেত হয়ে পবিত্র হজ পালন করছেন। বাংলাদেশ থেকেও এবছর হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলিম এবার হজ করতে আরাফাতের ময়দানে হাজির হয়েছেন।

কোরবানিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের র্অথনীতি চাঙা হয়। কৃষক ও খামারিরা সারা বছর পশু পালন করেন এই দিনটিকে কেন্দ্র করে। বিগত কয়েক বছর ধরে দেশে গরু, ছাগল,ভেড়া ইত্যাদির উৎপাদন বেড়েছে। ফলে এখন আর কােরবানির চাহিদা মেটাতে অন্য দেশের পশুর ওপর নির্ভর করতে হয় না। এছাড়া কোরবানির চামড়া সংরক্ষণরে ওপরও বিশেষ জোর দেয়া প্রয়োজন। কোরবানির পশুর চামড়া দেশের চামড়াশিল্প বিকাশে বড় ভূমিকা রাখে।

ঈদের আনন্দ ও ত্যাগের মহিমা ছড়িয়ে পড়ুক ঘরে ঘরে।
পাঠক, লেখক, গ্রাহক, হকার, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ী—সবাইকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা।
ঈদ মোবারক।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ