Home বাণিজ্য ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলায় উপচে পড়া ভিড়

ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলায় উপচে পড়া ভিড়

হ্যালো বাংলাদেশ ডেস্ক
১৪৩ views

সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় প্রাণ ফিরছে বাণিজ্য মেলায়। সকাল থেকেই ঢল শুরু হয় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের। কেউ পরিবার, কেউ বন্ধুদের সাথে আবার কেউ প্রয়োজনীয় কেনাকাটার উদ্দেশ্যে মেলায় এসেছেন।

মগবাজার থেকে পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছেন আতাউর রহমান। তিনি জানান, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অন্যান্য দিন মেলায় আসা হয় না, অফিস থাকে। তাই পাঁচ বছরের মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে আজ ছুটির দিনে এসেছি। সাধ্য অনুযায়ী কেনাকাটা ও খাওয়া-দাওয়া করব। বাচ্চাটাকে নাগরদোলাসহ বিভিন্ন রাইডে চড়াবো। সবশেষে সন্ধ্যায় নিজের মোটরসাইকেলে করে বাসায় ফিরবো।

বেসরকারি একটি ব্যাংকে চাকরি করেন মনজুরুল করিম। তিনি বাণিজ্য মেলায় এসেছেন মা ও বোনের জন্য শীতের গরম কাপড়, বিশেষ করে কাশ্মীরি শাল কেনার জন্য। তিনি বলেন, সারা সপ্তাহে অফিসের কাজে দম ফেলার সুযোগ থাকে না। এদিকে মা-বোনের জন্য শালও কেনা দরকার। তাই ভাবলাম আজ যেহেতু শুক্রবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিন- তাই আজ যাওয়াটাই ভালো হবে। তাই এলাম। তবে বেশ কয়েকটি দোকানঘুরে যা মনে হলো, দামটা একটু চড়া। আরেকটু কম হলে মানুষ সহজেই কিনতে পারবে।

mela2

গত ৯ দিনে মেলায় দর্শনার্থী এসেছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, সময় গড়ানোর সাথে সাথে বাড়ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়। স্টলে-স্টলে চলছে হরেক রকমের অফার। কর্মীরা হাঁক-ডাকে তুলে ধরছেন নিজেদের পণ্যের কথা। কথা হলো তেমনই একজনের সাথে। তিনি জানান, ননস্টিক ফ্রাইপ্যান, ওভেনসহ নানা জিনিস বিক্রি করছি। অফারও আছে। কিন্তু সেই অর্থে ক্রেতা নেই। অনেকে আসছেন, ঘুরে দেখছেন, দরদাম করছেন, আবার চলে যাচ্ছেন। সাইদ নামের এই বিক্রয়কর্মী আরও বলেন, আশা করছি জুমার নামাজের পর থেকে ক্রেতা সমাগম আরও বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে বেচাকেনাও।

বাণিজ্য মেলায় কসমেটিকস পণ্য নিয়ে স্টল সাজিয়েছেন ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, অন্যান্য দিন সেভাবে না জমলেও আজ ছুটির দিনে মেলা জমবে। তবে সেটা বিকেলের দিকে। একই সুর জামা-কাপড় ব্যবসায়ী রহমত উল্লাহর মুখেও। তিনি বলেন, আজ অনেক লোকসমাগম হবে। কারণ, সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এদিনে সবাই মেলায় আসেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। তাই বেচাকেনাটাও অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি হবে। মেলার টিকিট কাউন্টারেও দেখা গেলো দর্শনার্থীদের ভিড়।

এদিক, গত ৯ দিনে মেলায় দর্শনার্থী এসেছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ। ৩ লাখ ২৫ হাজার টিকেটের মাঝে ৭০ শতাংশ টিকেট কাটা হয়েছে অলাইনে। মেলা মাসব্যাপী সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত।

উল্লেখ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মেলা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে আয়োজন করা হতো। করোনা মহামারির কারণে ২০২১ সালে মেলা আয়োজন করা হয়নি। আর মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার মেলা পূর্বাচলে বিবিসিএফইসিতে আয়োজন করা হয়।

mela3

স্টলে-স্টলে চলছে হরেক রকমের অফার

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা যায়, এবারের বাণিজ্য মেলায় বিশ্বের ৭টি দেশের ১১টি প্রতিষ্ঠানসহ রয়েছে ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানকে প্রাধান্য দিয়ে করা হয়েছে জুলাই চত্বর, ছত্রিশ চত্বর ও তারুণ্যের প্যাভিলিয়ন। ই-টিকিটের ব্যবস্থা থাকায় প্রবেশ পথে রয়েছে ভিন্ন ব্যবস্থা। প্রথমবারের মতো অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল বা প্যাভিলিয়ন স্পেস বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে বিশেষ ছাড়ে উবার সার্ভিস।

বাণিজ্য মেলায় সম্ভাবনাময় সেক্টর বা পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এ বছর। বিদেশি উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠানের সুবিধার্থে রয়েছে স্বতন্ত্র সোর্সিং কর্নার, ইলেক্ট্রনিক্স ও ফার্নিচার জোন। বয়সভিত্তিক দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছে প্রযুক্তি কর্নার, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্নার। শিশুদের নির্মল চিত্তবিনোদনের জন্য মেলায় রয়েছে শিশু পার্কও।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ