প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে ৮ মার্চ পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’। এই দিনটি পালনের পেছনে অনেক উদ্দেশ্য রয়েছে। যেমন- লিঙ্গ বৈষম্য, তাদের সম্মান জানানো, কখনও যেন তাদের কারোর কাছে অবহেলিত না হতে হয়। যদিও নারীদের সম্মান জানানোর জন্য কোনো বিশেষ দিনের দরকার পড়ে না।এরপরও দিনটির তাৎপর্য রয়েছে নারীদের জন্য।
১৯৭৫ সালে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছিল দিনটি। ওইদিন থেকেই পালিত হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। তার ঠিক ২ বছর পর অর্থাৎ ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পারিষদ ৮ মার্চকে নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
তবে নারী দিবস নিয়ে রয়েছে বহু পুরনো ইতিহাস। ১৯০৯ সালে নারী ক্ষমতায়ন ও সমতার লক্ষ্যে ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে ‘জাতীয় নারী দিবস’পালিত হয়। যা সমাজতান্ত্রিক পার্টি অফ আমেরিকার উদ্যোগে পরিচালিত হয়। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারীদের সম্মেলনে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেতা ক্লারা জেটকিন আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

এই বছর নারী দিবসের থিম হলো ‘অ্যাক্সিলারেট অ্যাকশন’
১৯১১ সালে, আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রথমবারের মতো অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি এবং সুইজারল্যান্ডে পালিত হয়। ১৯ মার্চ তারিখে আয়োজিত এই দিবসে এক মিলিয়নেরও বেশি নারী ও পুরুষ র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। তারা কর্মসংস্থান, ভোটাধিকার এবং সরকারি অফিসে কাজের অধিকারসহ বৈষম্যের অবসানের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যান।
৯১৩-১৯১৪ সালে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, রাশিয়ার নারীরা শান্তির জন্য প্রচারণা চালান এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি (গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে ৮ মার্চ) তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করেন। ১৯১৪ সালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নারীরা যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের পাশাপাশি নারী সংহতির প্রতীক হিসেবে এই দিবস পালন করেন।
প্রতিবছর নারী দিবসের একটি বিশেষ থিমের ওপর নির্ভর করে পালন করা হয়। এই বছর নারী দিবসের থিম হলো ‘অ্যাক্সিলারেট অ্যাকশন’। সকল নারীদের সমান অধিকার, সমতা, ক্ষমতা দেওয়া, তাদের ক্ষমতায়েনের উপর ভিত্তি করে কিন্তু এই থিম তৈরি করা হয়েছে।
নারী দিবসের গুরুত্ব
নারীরা প্রতিনিয়ত বাধার সম্মুখীন হন, তবুও তারা সমাজের প্রতিটি স্তরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। নারী দিবস শুধু একটি উদযাপন নয়, এটি একটি আন্দোলন যা নারী অধিকারের জন্য লড়াই করে। এটি মনে করিয়ে দেয় যে সমতা অর্জনের পথ এখনও অসম্পূর্ণ।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস শুধুমাত্র একটি দিন উদযাপনের জন্য নয়, এটি আমাদের সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়া কোনো জাতির প্রকৃত উন্নতি সম্ভব নয়। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে এমন একটি সমাজ গড়ে তুলি যেখানে নারী ও পুরুষ সমানভাবে সম্মানিত হবে।

অধিকার আদায়ে প্লেকার্ড হাতে এক দল নারী, ছবি: রিয়েল সিম্পল
পালিত হওয়ার কারণ
এই দিনটি নারী অধিকার ও সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য পালন করা হয়। পুরুষদের সমান অধিকার পাওয়া, নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা, শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সমান সুযোগ সৃষ্টি করা, এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অন্যতম লক্ষ্য।