দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২টা বাজতেই নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে অবিরত আতশবাজির ঝলকানিতে বর্ণিল হয়ে উঠে ঢাকার আকাশ। সাথে ফুটতে থাকে পটকা। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে এভাবেই একযোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ছাদ বা কোথাও মাঠ থেকে আতশবাজি পোড়ানো হয়। কেউ উড়ায় ফানুসও। বলা যায়, পুরানো বছরকে পাশ কাটিয়ে সমস্ত দুঃখ দুর্দশা ভুলে নতুন উদ্যমে, নতুন প্রত্যাশায় নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজধানীবাসী।
নতুন প্রত্যাশায় শুরু হওয়া বছরকে স্বাগত জানাতে আয়োজনের কমতি ছিল রাখেননি উদযাপনকারীরা। তবে আশার কথা এমন আয়োজনেও কোথাও কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। অবশ্য দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য রাজধানীতে এ আয়োজন বন্ধের নির্দেশনা ছিল আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর।
এ উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দিয়েছেন। নিরাপত্তার জন্য রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছেন পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা। অনেক এলাকায় যান চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
নানা বিধিনিষেধ থাকলেও রাজধানীবাসী ব্যাপক আয়োজনে আবার কোথাও অল্প পরিসরে আয়োজন করছে পার্টি। আনন্দ-উচ্ছ্বাসের কমতি থাকছে না যেন। অনেকে বাসার ছাদে বারবিকিউ পার্টি, কেক কাটাসহ নানা আয়োজন রেখেছেন।
এদিকে দেশের সাধারণ মূল্যস্ফীতি গত মার্চ থেকে ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। গত নভেম্বরে ছিল ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ওই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি উঠে যায় ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশে, যা গত সাড়ে ১৩ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
নতুন বছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজারব্যবস্থাপনা ঠিক রাখার দিকে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক আবু ইউসুফ জানান, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প, পরে লাগবে বা খরচ বেশি দেখানো হয়েছে; এসব প্রকল্প থেকে অন্তত ৮ শতাংশ যদি কমানো যায়, তাহলে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় থাকা মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ করা সম্ভব। কিংবা যারা আছে, তাদের সুবিধা বাড়ানো যাবে।
নতুন বছরে জ্বালানি পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো তৌফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, সরকার যদি কঠিন পদক্ষেপের মাধ্যমে জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল ও বিদ্যুতের দাম ঠিক রাখতে পারে, তাহলে ব্যবসায়ীদের কর ছাড় কমিয়ে দিলেও তারা পুষিয়ে নিতে পারবেন।
