Home স্বাস্থ্য ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩০ views

ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এডিস মশার চারটি প্রজাতির কামড়েই ডেঙ্গু হতে পারে। 

প্রতিবছর দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। ঝরে যাচ্ছে বহু প্রাণ। বর্ষায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লেও ছাড়াবছর জুড়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ইউনিসেফের রিপোর্ট অনুযায়ি ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ৩১৬,১৬০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। যাদের মধ্যে ১৬৪৩ জন মারা যায়। আর সচেতনতাই ডেঙ্গু আক্রান্তের একমাত্র প্রতিরোধ।

এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গুর ভাইরাস দেহে প্রবেশ করে। এই মশা সাধারণত ভোরবেলা ও সন্ধ্যার পূর্বে কামড়ায়। ডেঙ্গু জীবাণুবাহী এডিস মশা কোনো ব্যক্তিকে কামড়ালে চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে সেই ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। জ্বর, মাথা ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, পেটে ব্যথা, মাংসপেশী ও হাড়ে ব্যথা বমি-বমি ভাব ডেঙ্গু জ্বরের কিছু সাধারণ লক্ষণ। সাধারণ চিকিৎসাতেই ডেঙ্গুজ্বর সেরে যায়, তবে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম এবং হেমোরেজিক ডেঙ্গুজ্বর মারাত্মক হতে পারে। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে আলাদা। এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে অথবা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) ও ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

যে কোনো রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। ডেঙ্গু কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় তা সবার জন্য জানা এবং মেনে চলা খুবই জরুরি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের করণীয় কাজ গুলো জেনে নেয়া যাক:

এডিস মশার কামড় থেকে বাঁচাতে মশার আবাসস্থল ধ্বংস করে মশার বংশবিস্তার প্রতিরোধ করতে হবে।

ব্যবহার যোগ্য পাত্রসমূহে যেমন: বালতি, ড্রাম, ফুলের ও গাছের টব, ফ্রিজ এবং এয়ার কন্ডিশনারের নীচের পানি নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। 

পানি পূর্ণ কোনো পাত্রের গায়ে লেগে থাকা মশার ডিম অপসারণে পাত্রটি ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে।

doctor is looking thermometer measuring body temperature his patient 1150 6142 copy 1
ছবি: ফ্রিপিক

যতটুকু সম্ভব বাহিরে বের হলে শরীর ঢেকে রাখুন। পা ঢাকার  জন্য  লম্বা মোটা মোজা ব্যবহার করুন। শরীরের খোলা অংশে মস্কুইটো রিপেলেন্ট লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করুন। এসব লোশন বা ক্রিম শরীরের খোলা অংশে মশার কামড় থেকে রক্ষা করে।

রাতে মশারি ব্যবহার করুন। দিনের বেলাতেও বিশ্রাম নেওয়ার ক্ষেত্রে মশারি ব্যবহার করুন। ঘরে ছোট বাচ্চা এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখুন। তাদেরকে এই সময় সার্বক্ষণিক মশারির ভেতরে রাখাই ভালো। 

ঘরে সব সময় যেন পর্যাপ্ত  আলো-বাতাস আসে সেটা খেয়াল রাখতে হবে। মশা সাধারণত অন্ধকার এবং স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে দেখা যায়। বাড়ির কোনো রুমে বা বাথরুমে পানি জমতে দেয়া যাবে না। 

বাড়ির দরজা-জানালায় নেট ব্যবহার করবেন যেন বাড়িতে কোনো মশা প্রবেশ করতে না পারে। এডিস মশা সাধারণত সকাল এবং সন্ধ্যায় কামড়ায়। তাই এই সময় বাড়ির জানালা এবং দরজা বন্ধ রাখতে হবে।

শুধু নিজের বাড়ি না, আশপাশের পরিবেশও রাখতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। চিপসের প্যাকেট বা পানির বোতল যত্রতত্র ফেলবেন না। এগুলোতে পানি জমে মশা জন্মাতে পারে। ঘরের আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে যেন ময়লা আবর্জনা জমে না থাকে। আমাদের সকলের সচেতনতাই পারে ভয়ঙ্কর এই রোগ থেকে দেশের মানুষকে  বাঁচাতে। 

সূত্র: ঢাকা মশক নিবারণী দপ্তর

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ