ইসরায়েলি নৌবাহিনী ভূমধ্যসাগরে একটি মানবিক সহায়তাবাহী জাহাজ আটক করেছে। যেখানে সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থানবার্গসহ ১২ জন কর্মী ছিলেন। ‘ম্যাডলিন’ নামের জাহাজটি গাজায় শিশুদের জন্য খাদ্য, চিকিৎসার সরঞ্জাম, ময়দা, চাল, ডায়াপার, নারীদের স্যানিটারি পণ্য, পানি বিশুদ্ধকরণ কিট, ক্রাচ ও শিশুদের কৃত্রিম অঙ্গ। ৯ জুন ইসরায়েল সময় রাত ২টার দিকে তাদের আটক করা হয়।
১লা জুন ইতালির সিসিলি থেকে যাত্রা শুরু করলেও, আন্তর্জাতিক জলসীমায় ইসরায়েলি কমান্ডোরা জাহাজটিকে ঘিরে ফেলে এবং সকলকে গ্রেফতার করে আশদোদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। আর গাজা উপকূল ছুঁতে পারলো না আহা জাগানিয়া গ্রেটার এই জাহাজ।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, এই অভিযান ছিল গাজা অবরোধ নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনা বাড়ানোর একটি মিডিয়া স্টান্ট। তাদের দাবি, জাহাজে হামাসের সাথে সম্পৃক্ততার প্রমাণ নেই। তবে এটি ইসরায়েলের নিরাপত্তা নীতিকে চ্যালেঞ্জ করেছিল।
অন্যদিকে, ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ এই ঘটনাকে আইনবহির্ভূত আটক বলে নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো জোর দিয়ে বলেছে, গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানো কোনো অপরাধ নয় এবং অবরোধ মানবিক সংকটকে তীব্র করছে।

গাজার জন্য সাহায্য নিয়ে যাত্রা করছেন বিশ্বের অন্যতন পরিবেশবাদী গ্রেটা থুনবার্গ। ছবি: ইন্টাগ্রাম
গ্রেটা থুনবার্গের গ্রেফতারের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সুইডেন ঘটনাটির তদন্ত দাবি করেছে, অন্যদিকে হামাস ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে “জরুরি সাহায্য বাধাদান” বলে অভিহিত করেছে। আটককৃতদের নিরাপদে মুক্তি দেওয়া হবে বলে ইসরায়েল জানালেও, এই ঘটনা গাজার জন্য মানবিক প্রবেশাধিকার নিয়ে চলমান বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে।
এই যাত্রায় বিপদের সম্ভাবনা আছে জেনে গ্রেটা তার পূর্ব ধারণকৃত ভিডিওতে জানিয়েছেন যে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় তাদের আটক করা হয়েছে। তাদেরকে মুক্তি দেওয়া জন্য সুইডিশ সরকারকে চাপ দিতেও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
যাত্রা শুরুর দিকে জাহাজ থেকে এক বক্তব্যে গ্রেটা জানান, সারা দুনিয়া গাজার এই বর্বর হত্যাকাণ্ডে চুপ করে আছে। কিন্তু আমরা যদি চুপ হয়ে যাই তাহলে আমরা আর মানুষ থাকব না। তাই আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে। এ সময় গ্রেটা আবেগঘন হয়ে পড়েন।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, এপি নিউজ, হাফপোস্ট