Home বাংলাদেশ বাংলাদেশে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালিত

বাংলাদেশে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালিত

১১ views

বাংলাদেশে পালিত হলো নিরাপদ মাতৃত্ব ও প্রসবজনিত ফিস্টুলা নিরসনের আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫। উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনার ম্যধ দিয়ে বাংলাদেশ পুনরায় নিশ্চিত হলো মাতৃস্বাস্থ্যের প্রতি এবং প্রসবজনিত ফিস্টুলা নিরসনের অঙ্গীকার।

বুধবার (২৮ মে) , স্বাস্থ্য ভবনে এক জাতীয় উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনার মাধ্যমে আয়োজনটি পরিচালনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাতৃস্বাস্থ্য কর্মসূচি। সহযোগিতায় ছিল পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর (DGFP), নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর (DGNM), এবং বাংলাদেশ স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা সমিতি (OGSB), কারিগরি সহায়তা প্রদান করে ইউএনএফপিএ ।

এই উপলক্ষ্যে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস এবং প্রসবজনিত ফিস্টুলা নিরসনের আন্তর্জাতিক দিবস ২০২৫ একসাথে উদযাপন করা হয়, যা মাতৃমৃত্যু হ্রাস ও ফিস্টুলার মতো অবহেলিত মাতৃস্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ বছরের বৈশ্বিক প্রতিপাদ্য ছিল: “তার স্বাস্থ্য, তার অধিকার: একটি ফিস্টুলা ও প্রসবজনিত আঘাতবিহীন ভবিষ্যতের আকৃতি,” যা মাতৃস্বাস্থ্যে সমতা, মর্যাদা ও অধিকারকে গুরুত্ব দিয়েছে।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিএএইচ লাইনের পরিচালক ডা. এস. এম. আব্দুল্লাহ-আল-মুরাদ, যেখানে তিনি নিরাপদ মাতৃত্ব ও ফিস্টুলা নিরসনের সমন্বিত কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরেন।

আলোচনায় দুটি কারিগরি উপস্থাপনা ছিল। ওজিএসবি সভাপতি অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান মাতৃস্বাস্থ্যের জাতীয় অগ্রাধিকারের বিষয়ে কথা বলেন, যেখানে তিনি গুণগত, সম্মানজনক সেবা ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতির ওপর জোর দেন। ইউএনএফপিএ -এর প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট ডা. অনিমেষ বিশ্বাস ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ফিস্টুলা নির্মূলের অগ্রযাত্রা তুলে ধরেন, বিশেষ করে জেলা-ভিত্তিক মডেল, যা সময়মতো শনাক্তকরণ, রেফারাল ও পুনর্বাসনের ওপর জোর দেয়।

DGHS, DGFP, DGNM ও OGSB-এর শীর্ষ কর্মকর্তারা আলোচনায় অংশ নেন এবং নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

ইউএনএফপিএ -এর প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বিভবেন্দ্র সিং রঘুবংশী ইউনিয়ন পর্যায়ে ২৪/৭ প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা চালু করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে সেবার সুযোগ ও সমতা নিশ্চিত হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক শেখ সাইদুল হক প্যানেল থেকে আসা সুপারিশগুলো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তির প্রতিশ্রুতি দেন।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন), DGHS-এর ডা. মো. রিজওয়ানুর রহমান আলোচনার কার্যকর ফলাফলের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, সংশ্লিষ্ট সকল অধিদপ্তরে এ বিষয়গুলো পৌঁছে দেওয়া হবে।

আলোচনাটি দক্ষভাবে পরিচালনা করেন UNFPA-এর SRHR বিশেষজ্ঞ ডা. আবু সায়েদ মো. হাসান, যিনি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গতিশীল পরিবেশ তৈরি করেন।

অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে একটি দৃঢ় আহ্বানের মাধ্যমে: মাতৃস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ জাতীয় অগ্রাধিকার দিতে হবে, এবং কোনো নারী যেন আর প্রতিরোধযোগ্য প্রসবজনিত আঘাতের যন্ত্রণা ও একাকিত্বে ভুগতে না হয়। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে—এবং প্রমাণ করছে, রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সমন্বিত অংশীদারিত্ব ও সম্প্রদায়ভিত্তিক কার্যক্রমের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি এক লাখ জীবিত জন্মে মাতৃমৃত্যু ৭০-এ নামিয়ে আনা এবং ফিস্টুলা নির্মূল করা শুধু লক্ষ্য নয়, একটি অর্জনযোগ্য বাস্তবতা।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ