Home লাইফস্টাইল বেশি মুরগি খেলে আসলেই কি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে?

বেশি মুরগি খেলে আসলেই কি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে?

ফাহমিদা শিকদার
৪০ views

বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে মুরগির মাংস অন্যতম জনপ্রিয় প্রাণিজ আমিষ। দাম তুলনামূলক কম, রান্নাও সহজ, আর স্বাদেও বেশ গ্রহণযোগ্য—এইসব কারণেই মুরগির মাংসের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, অতিরিক্ত মুরগির মাংস খাওয়ার সঙ্গে কিছু ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দক্ষিণ ইতালির ৪,৮৬৯ জন মধ্যবয়সী মানুষের উপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি সপ্তাহে ৩০০ গ্রাম বা তার বেশি পরিমাণে মুরগির মাংস খাওয়ার সঙ্গে সার্বিক মৃত্যুহার এবং হজমতন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার একটি সম্পর্ক থাকতে পারে।

গবেষণা থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সপ্তাহে ৩০০ গ্রাম বা তার বেশি পরিমাণে মুরগির মাংস খেলে হজমতন্ত্রের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে ২.৩ শতাংশ, পুরুষদের ক্ষেত্রে যা ২.৬ শতাংশ। অন্যদিকে একই কারণে সার্বিক মৃত্যুর ঝুঁকি ২৭% পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। তবে এখানে গবেষণায় অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। কারণ অংশগ্রহণকারীরা নিজেরাই তাদের খাদ্যাভ্যাসের তথ্য দিলেও শারীরিক কার্যকলাপ, জীবনযাপন পদ্ধতি ও মুরগির উৎস কী ছিল- এই তথ্যগুলো দেয়নি। সেই তথ্যগুলোর অনুপস্থিতিও গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণে সীমাবদ্ধতা তৈরি করেছে।

curry with chicken onions indian

মুরগির মাংস ভাপে বা ঝোল করে রান্না করা স্বাস্থ্যকর, ছবি: ফ্রিপিক

ক্যান্সারে ঝুঁকি বাড়ার পিছনে মুরগির উৎস অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক খামারে দ্রুত মুনাফার জন্য ব্রয়লার মুরগিকে বড় করতে ব্যবহার করা হয় হরমোন ও অ্যান্টিবায়োটিক। দীর্ঘমেয়াদে এসব রাসায়নিক পদার্থ মানুষের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে, যা ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগের সম্ভাবনা তৈরি করে। আবার রান্নার পদ্ধতি ও তাপমাত্রার কারণেও ঝুঁকি বাড়তে পারে। উচ্চ তাপে গ্রিল বা ডিপ ফ্রাই করলে heterocyclic amines (HCAs) এবং polycyclic aromatic hydrocarbons (PAHs) নামক কিছু ক্যান্সারজনিত রাসায়নিক উৎপন্ন হয়। এসব উপাদান দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে জমা হয়ে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

মুরগির মাংস একদম খাওয়া যাবে না—এমন নয়। তবে অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। আজকের দিনে স্বাস্থ্য সচেতনতা মানে কেবল খাবার নয়, সেই খাবারের উৎপত্তি, প্রক্রিয়াকরণ ও রান্নার পদ্ধতি সম্পর্কেও সচেতন থাকা। যেহেতু নতুন গবেষণায় সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেহেতু এখনো জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না যে, আসলেই বেশি মুরগি খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। তবুও কেউ যদি সতর্ক থাকতে চান তাহলে, কিছু উপায় মেনে চলতে পারেন।

যেমন, সপ্তাহে ২-৩ বার মুরগির মাংস খাওয়া নিরাপদ বলে অনেক পুষ্টিবিদের মত। গ্রিল, বারবিকিউ না করে; ঝোল বা ভাপা রান্না করুন। বাজার থেকে কিনে আনার পর ভালো করে ধুয়ে রান্না করতে হবে। যদি সম্ভব হয়, ব্রয়লার মুরগির বদলে দেশি বা অর্গানিক মুরগি খান।

 

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ