ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এরইমধ্যে ইরানে হামলার পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়ে রেখেছেন, মার্কিন জেনারেলরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছেন, এখন অপেক্ষা কেবল ট্রাম্পের আদেশের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গ নিউজ জানিয়েছে, ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তারা ‘আগামী দিনে ইরানে হামলার সম্ভাবনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন’।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, এর মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে ওয়াশিংটন ‘তেহরানের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার জন্য অবকাঠামো তৈরি করছে।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘ফেডারেল সংস্থার কয়েকজন শীর্ষ নেতাও হামলার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন।’
ইরানের পারমাণবিক শক্তি ধ্বংস করার লক্ষ্য ঘোষণা দিয়ে দেশটিতে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তবে, ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি মাটির এত গভীরে অবস্থিত যে সেটি ধ্বংসের সক্ষমতা ইসরায়েলের নেই। এই সক্ষমতা রয়েছে কেবলমাত্র আমেরিকার।
ফলে, ইরান যুদ্ধে ইসরায়েলের পরমবন্ধু আমেরিকার জড়িয়ে পড়ার জল্পনা-কল্পনা অনেকদিন ধরেই চলছে। সেই আলোচনা আরও উসকে দিয়ে গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার দেশ এই যুদ্ধে অংশ নিতে পারে, নাও নিতে পারে।
সিবিএস নিউজের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন, কিন্তু দেশটিতে হামলা চালানো হবে কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি।
এরই মধ্যে নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ইরানে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন মার্কিন নাগরিকরা। তারা এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে না জড়ানোর দাবিও জানাচ্ছেন।
আবার মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ট্রাম্পেরও প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় যেন সর্বাত্মক হামলা চালানো হয়।
‘এত গভীর ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় হামলার সক্ষমতা কেবল আমাদেরই আছে’ উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশে সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, ‘কাজ শেষ করুন।’
ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি পাহাড়ি এলাকায় মাটির নিচে আনুমানিক ৮০ থেকে ৯০ মিটার গভীরে অবস্থিত। এমন জায়গায় হামলা করে লক্ষ্যভেদের উপযোগী ‘বাঙ্কার বাস্টিং’ বোমা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে।
ইরান বরাবরই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কথা অস্বীকার করেছে এবং জাতিসংঘের পারমাণবিক সংস্থাও জানিয়েছে যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে, এমন কোনো ইঙ্গিতও তাদের কাছে নেই।
সূত্র : সিবিএস, আল জাজিরা ও ব্লুমবার্গ