Home বিশ্ব সঙ্কটের মধ্যেই জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন সাবেক ফুটবলার

সঙ্কটের মধ্যেই জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন সাবেক ফুটবলার

নিজস্ব প্রতিবেদক
১১১ views

সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল জর্জিয়া। এ রকম টালমাটাল পরিস্থিতিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন সাবেক ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকার মিখেইল কাভেলাশভিলি। শনিবার দেশটির পার্লামেন্টে তাকে এ পদের জন্য নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।

দেশটির রাজনীতিতে অস্থিরতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে দেশটির শহরগুলোতে। এমন পরিস্থিতিতে কাভেলাশভিলির নিয়োগ এই সংকট আরও বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিবিসি বলেছে, ৫৩ বছর বয়সী কাভেলাশভিলি ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী শাসক দল জর্জিয়ান ড্রিম পার্টির একজন সাবেক এমপি। জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট পদটা অলঙ্কারিক। জনগণের সরাসরি ভোটে নয়, বরং সংসদ সদস্য, মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলর ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত ৩০০ সদস্যের ইলেকটোরাল কলেজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে থাকে। ১৯৯১ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত জর্জিয়ার জাতীয় দলের হয়ে ৪৬ ম্যাচে ৯ গোল করা কাভেলাশভিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে বিতর্ক চলছে বেশ।

বিতর্কিত সংসদে অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিয়োগ পাচ্ছেন তিনি। কাভেলাশভিলি একমাত্র প্রার্থী হলেও, চারটি প্রধান বিরোধী দল তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সংসদীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে অস্বীকার করছে তারা। গত অক্টোবরের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে দাবি তাদের। জর্জিয়ার বিদায়ী পশ্চিমাপন্থি প্রেসিডেন্ট সালোমে জোরাবিচভিলি কাভেলাশভিলির নিয়োগকে একটি প্রতারণা হিসাবে আখ্যা দিয়ে তার নিন্দা করেছেন।

এদিকে জোরাবিচভিলির নিজ দলের নেতা নিনো তিসিলোসানি সাংবাদিকদের বলেছেন, জোরাবিচভিলিকে এখন আর জনগণ চায় না। জর্জিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি কোবাখিদজে অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট জুরাবিচভিলি জর্জিয়ার স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছেন। তিনি জোরালোভাবে বলেছেন, ২৯ ডিসেম্বর মেয়াদ শেষ হলে প্রেসিডেন্ট জুরাবিচভিলিকে পদত্যাগ করতে হবে। আমাদের খুব শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের অবশ্যই কোনো অসুবিধা নেই। 

কাভেলাশভিলির ড্রিম পার্টি গত ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। এরপর থেকে জর্জিয়া অস্থিরতায় আরও ফুলে ফেঁপে ওঠে। বিরোধীরা এ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলেছে। গত ২৮ নভেম্বর যখন সরকার ঘোষণা দেয়, তারা ২০২৮ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের আলোচনা স্থগিত রাখবে তখন আন্দোলনে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়।

জর্জিয়ানদের একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সমর্থন করে। নতুন নির্বাচনের দাবিতে ইইউর পতাকা নিয়ে প্রতি রাতেই পার্লামেন্টের বাইরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন। বিবিসি জানিয়েছে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুসারে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই গণতান্ত্রিক পথে পিছিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের নিন্দা করেছে।

গত দুই সপ্তাহে জর্জিয়াজুড়ে ৪৬০ জনেরও বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে। ইইউ পুলিশের নৃশংসতা ও বেআইনি শক্তির নিন্দা করেছে। বৈঠকে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বিবেচনা করবে তারা। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ইতোমধ্যে সরকারি মন্ত্রী ও পুলিশসহ জর্জিয়ান কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সূত্র: বিবিসি

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ