আসাদের পতনের পর যা ঘটছে সিরিয়ায়
সিরিয়ার সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালানোর হার বাড়িয়েছে ইসরায়েল। বাশার আল-আসাদের পতনের পর তারা এ পর্যন্ত দেশটির পাঁচ শতাধিক হামলা করেছে। এসব হামলায় বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিমানঘাঁটি, যুদ্ধজাহাজ, অস্ত্রাগার ও বিমানবিধ্বংসী অস্ত্র কেন্দ্র।
বাশার আল-আসাদের পতনের পর ইসরায়েলি হামলা তীব্র
যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (SOHR) এর তথ্য মতে, ইসরায়েল সর্বশেষ লাতাকিয়া ও তারতাসে একাধিক সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। তারতাসে অস্ত্রের গুদামগুলোতে বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য রাখা কিছু ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্ফোরণ ঘটে। এই হামলাগুলোতে সিরিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ রাডারও লক্ষ্যবস্তু হয়।
এয়ারস্ট্রাইক- সেনা ক্যাম্পে হামলা
ইসরায়েলি বাহিনী সিরিয়ার অন্যত্রও হামলা চালিয়েছে। লাতাকিয়ার রাডার স্থাপনা, দেইর আজোরের সেনা ক্যাম্প ও সামরিক বিমানবন্দর, এমনকি পালমিরা শহরেরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবকাঠামোতে হামলা হয়েছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় ৪৮০টিরও বেশি হামলা চালানো হয়েছে।
নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা
৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার স্বৈরশাসক আসাদের পতন ঘটে, যখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী মাত্র ১২ দিনের ঝটিকা আক্রমণে দামেস্ক দখল করে। আসাদ সিরিয়া থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন। বিদ্রোহী নেতা হায়াত তাহরির আল-শাম (HTS) দেশ রক্ষার কথা জানিয়েছেন।
এইচটিএস নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি আসাদের পতনের পর এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের গুদামগুলো সুরক্ষিত করবেন। আসাদের নিরাপত্তা বাহিনী ভেঙে দেবেন। একই সঙ্গে,সিরিয়ার সবচেয়ে কুখ্যাত কারাগারগুলো বন্ধ করার কথা ঘোষণা দেন তিনি।
তেলআবিবের লক্ষ্যবস্তু সামরিক স্থাপনা
ইসরায়েলি বাহিনী সিরিয়ায় হামলা চালানোর মূল উদ্দেশ্য হিসেবে জানিয়েছে যে, তারা সিরিয়ার সামরিক শক্তি দুর্বল করতে এবং দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চায়। এরই অংশ হিসেবে সিরিয়ার যুদ্ধজাহাজ, বিমানঘাঁটি, সামরিক যান, অস্ত্র উৎপাদন কারখানা, অস্ত্রাগারসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল। পরবর্তীতেও এটি অব্যাহত রাখবে তেলআবিব।
সম্ভাব্য পরিবর্তন
আসাদের পতনের পর দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি’র নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা সম্ভাব্য রাসায়নিক অস্ত্রের স্থানগুলো সুরক্ষিত করবে এবং আসাদের নিরাপত্তা বাহিনী ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর ফলে সিরিয়ার সামরিক শক্তি আরও দুর্বল হতে পারে। নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা