ভিয়েতনামের প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপটি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, টেলিগ্রাম কর্তৃপক্ষ অপরাধমূলক কার্যকলাপে সহযোগিতা না করায় এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সরকারি একটি নথি অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়ের টেলিযোগাযোগ বিভাগ ২১ মে তারিখে দেশের সব টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে টেলিগ্রাম বন্ধ করতে এবং ২ জুনের মধ্যে তার প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে।
নথিতে উল্লেখ আছে, দেশজুড়ে মোট ৯,৬০০টির বেশি টেলিগ্রাম গ্রুপ ও চ্যানেলের মধ্যে ৬৮% অবৈধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, যার মধ্যে প্রতারণা, মাদক পাচার এবং সন্ত্রাসবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট সন্দেহজনক কার্যক্রম রয়েছে।
ভিয়েতনামের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের পক্ষ থেকে এই আদেশ দেয়া হয়েছে, কারণ টেলিগ্রাম পুলিশ কর্তৃক চালানো অপরাধমূলক তদন্তে ব্যবহারকারীদের তথ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
টেলিগ্রাম এবং ভিয়েতনাম প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় উভয়ই এই বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।ভিয়েতনামের সরকার টেলিগ্রামকে সামাজিক মিডিয়ার মতো অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের মতো আইনের আওতায় আনতে চাইছে, যেখানে অবৈধ বা রাষ্ট্রবিরোধী তথ্য অপসারণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
দেশটির পুলিশ এবং সরকারি সংবাদমাধ্যম ইতোমধ্যেই টেলিগ্রাম ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রতারণা ও অপরাধের আশঙ্কা নিয়ে সতর্ক করেছে। মন্ত্রণালয়ের নথিতে আরও বলা হয়েছে, অনেক বড় বড় গ্রুপ রয়েছে যেগুলো রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং বিরোধী মত প্রকাশের জন্য ব্যবহার হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী প্রায় এক বিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে টেলিগ্রামের। নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিয়ে এর আগে ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ডেটা রিপোর্ট ওয়েবসাইট অনুসারে, ২০২৫ সালের শুরুতে ভিয়েতনামে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৭৯.৮ মিলিয়ন। আর ডেটা বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান এসওএএক্স জানিয়েছে, ভিয়েতনামে টেলিগ্রাম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১.১৮ কোটি। বিশ্বব্যাপী প্রায় একশো কোটি ব্যবহারকারী থাকা টেলিগ্রাম অ্যাপটি নানা সময়ে নিরাপত্তা ও তথ্য ফাঁসের অভিযোগে বিতর্কে জড়িয়েছে।
টেলিগ্রামের রুশ বংশোদ্ভূত প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী পাভেল দুরভ সম্প্রতি প্যারিস বিমানবন্দরে আটক হন এবং ‘চরমপন্থী ও সন্ত্রাসবাদী’ কনটেন্ট ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে একাধিক মামলায় অভিযুক্ত হন। তিনি এখন ফ্রান্সে অবস্থান করছেন এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দেশ ছাড়তে পারছেন না বলে জানা গেছে।
সূত্র : আল জাজিরা
