মহাবিশ্বের বিশালতা ও সময়ের যোগসূত্র যিনি বুঝিয়েছেন তিনি অ্যালবার্ট আইনস্টাইন। পৃথিবীর সবচেয়ে মেধাবীদের একজন। এই বিজ্ঞানী কিন্তু ছোটবেলায় কোনো বিস্ময়বালক ছিলেন না। বরং ছিলেন মা-বাবা ও শিক্ষকদের দুশ্চিন্তার কারণ। এমনকি তার শিক্ষকরা ভেবেছিলেন তিনি ‘মানসিকভাবে ধীর’।
সাধারণ মানুষের বুদ্ধিমত্তার গড় স্কোর ১০০। বেশিরভাগের ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তার স্কোর ৮৫ থেকে ১১৫ এর মধ্যে। আইনস্টাইন কখনও আইকিউ টেস্টে অংশ নেননি। কিন্তু তার মেধা ও উদ্ভাবনের ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে ধারণা করা হয় তার আইকিউ স্কোর ১৬০।
আইনস্টাইন মানসিকভাবে ধীর বা স্লো লার্নার হলেও ছিলেন ভীষণ কৌতূহলী। প্রশ্নের বান ছুড়ে সবাইকে রীতিমতো বিরক্ত করে ফেলতেন। ধীরগতির শিক্ষার্থী হলে কি হবে, তার জানার ইচ্ছা ও চারপাশের সবকিছুকে প্রশ্ন করার প্রতি ভালোবাসা অল্প বয়স থেকেই।
আপেক্ষিক তত্ত্বের জন্ম হয় একটি দিকনির্দেশক কম্পাসের কারণে। বাবার কিনে দেওয়া একটি কম্পাসের প্রতি আইনস্টাইন প্রচন্ড কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। কম্পাসটির সূচ সর্বদা উত্তর দিক নির্দেশ করে। তিনি লক্ষ্য করেন যেভাবেই কম্পাস ঘুরানো হোক না কেন, সূচের উত্তরদিকমুখিতার কোনো পরিবর্তন হয় না। এই সাধারণ বিষয়টি মহাবিশ্বকে পরিচালনা করে এমন অদৃশ্য শক্তি সম্পর্কে তার কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে আর আমরা পেয়েছি ‘থিওরি অব রিলেটিভিটি’ বা ‘আপেক্ষিকতা তত্ত্ব’।
দ্রুতগতিতে কিছু শিখতে না পাওয়ার সংগ্রাম সত্ত্বেও আইনস্টাইনের কিন্তু থেমে থাকেননি। কৌতূহল ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তিনি সব ত্রুটির ঊর্ধ্বে গিয়েছেন। তার দেওয়া তত্ত্বগুলো স্থান, সময়, মাধ্যাকর্ষণ এবং আলোর প্রকৃতি সম্পর্কে সবার ধারণাকে চিরতরে বদলে দিয়েছে।
এই গল্পটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় প্রতিভা কখনও কখনও ধীরে ধীরে প্রস্ফুটিত হতে পারে। আইনস্টাইনের যাত্রা আমাদের শেখায় কৌতূহলী শক্তি এবং এটিকে লালন করার গুরুত্বকে কখনোই অবমূল্যায়ন করা যাবে না।