আজকের পারফিউমের বাজার যেন এক যুদ্ধক্ষেত্র—চকচকে বোতল, আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন আর অসংখ্য ব্র্যান্ডের প্রতিযোগিতা। কিন্তু এই বাহারি বোতলের ভেতরে লুকিয়ে থাকতে পারে এমন কিছু উপাদান যা আপনার ত্বক, শ্বাসতন্ত্র এবং পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। বিশেষ করে অ্যালকোহল এবং সিন্থেটিক ফ্রেগরেন্স—যা ত্বকে অ্যালার্জি, শুষ্কতা এমনকি হরমোনের ভারসাম্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে সুখবর হলো—আপনি চাইলে ঘরেই তৈরি করতে পারেন সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক, অ্যালকোহলমুক্ত এবং রাসায়নিকবিহীন পারফিউম। যেটি শুধু নিরাপদই নয়, বরং একান্তই আপনার নিজস্ব সুঘ্রাণের প্রতীক হয়ে উঠতে পারে।
কেন ঘরোয়া পারফিউম?
- অ্যালার্জি ও সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযোগী: বাজারে পাওয়া পারফিউমে থ্যালেটস, প্যারাবেনস এবং অ্যালকোহল থাকে যা অনেকের ত্বকে র্যাশ বা জ্বালাভাব সৃষ্টি করে।
- আপনি জানবেন, কোন উপাদান ব্যবহার করছেন। কৃত্রিমতার জায়গায় আসবে বিশুদ্ধতা।
- ঘরোয়া সুগন্ধি টেকসই ও পরিবেশবান্ধব। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারে পরিবেশের ওপর চাপ পড়ে না, এবং এটি বায়ু দূষণও করে না।
- আপনি চাইলেই নিজের রুচি অনুযায়ী ঘ্রাণ নির্বাচন করতে পারবেন। যা সবার কাছে হয়ে উঠবে আপনার নিজস্ব সুঘ্রাণ।

আপনি জানবেন, কোন উপাদান ব্যবহার করছেন তাই কৃত্রিমতার জায়গায় আসবে বিশুদ্ধতা, ছবি: আর্ট অব দ্যা রুট
ঘরোয়া পারফিউম তৈরির সহজ রেসিপি
উপকরণ
- ২ টেবিল চামচ ভেজিটেবল গ্লিসারিন / জোজোবা অয়েল / অ্যালোভেরা জেল (বেস হিসেবে)
- ১০-১৫ ফোঁটা প্রিয় এসেনশিয়াল অয়েল (ল্যাভেন্ডার, রোজ, লেমনগ্রাস, স্যান্ডালউড, অরেঞ্জ ইত্যাদি)
- ২ টেবিল চামচ গোলাপ জল
- একটি ছোট স্প্রে বোতল (গ্লাস বোতল হলে ভালো হয়)
প্রস্তুত প্রণালি
- পরিষ্কার বোতলে প্রথমে বেস অয়েল/গ্লিসারিন দিন।
- তাতে এসেনশিয়াল অয়েল ফোঁটা ফোঁটা করে মেশান।
- এরপর গোলাপ জল যোগ করে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে মিশিয়ে নিন।
- ২৪ ঘণ্টা ঠান্ডা ও অন্ধকার জায়গায় রেখে দিন যাতে ঘ্রাণগুলো একত্রে মিশে যায়। ব্যাস! এভাবেই তৈরি হয়ে গেল আপনার ঘরোয়া পারফিউম।

গ্লাস বোতলে সংরক্ষণ করলে ঘ্রাণ অনেক দিন টিকে, ছবি: ল্যাভেন্ডাররুম
পরামর্শ
- যদি আপনি আরও দীর্ঘস্থায়ী ঘ্রাণ চান, বেস নোট (যেমন: ভ্যানিলা, স্যান্ডালউড, প্যাচুলি) ব্যবহার করুন।
- গ্লাস বোতলে সংরক্ষণ করলে ঘ্রাণ অনেক দিন টিকে।
- হালকা গন্ধ পছন্দ করলে এসেনশিয়াল অয়েলের পরিমাণ কমান।
একটি ঘ্রাণ কখনো শুধু একটি গন্ধ নয়, সেটি হয়ে উঠতে পারে আত্মপরিচয়ের অংশ। যখন সেই ঘ্রাণ হয় প্রাকৃতিক, সতেজ এবং নিজ হাতে তৈরি—তখন সেটি হয়ে ওঠে আরও অর্থবহ।