Home সর্বশেষ ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল, কঠোর হুঁশিয়ারি তেহরানের

ইরানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল, কঠোর হুঁশিয়ারি তেহরানের

নিজস্ব প্রতিবেদক
১২২ views

ফিলিস্তিনের গাজা, লেবানন ও সিরিয়ায় অব্যাহত হামলা ও হামাসের সাবেক রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া, হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের একাধিক কমান্ডারকে হত্যার জবাবে গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলে বড় আকারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।

ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে অন্তত ১৮০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড ও ইসরায়েলি বাহিনীর তৎপরতায় এগুলোর বেশিরভাগই আকাশে ধ্বংস হয়। কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়। এরপর থেকে ইরান-ইসরায়েলের সম্পর্কে নতুন করে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

হামলার পরদিন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, ইরানের নিক্ষেপ করা কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর ঘাঁটিগুলোর ভেতরে আঘাত হেনেছে। তবে কোন কোন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে, তা স্পষ্ট করেনি ইসরায়েল। হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

হামলার পরপরই ইরানে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারাও একই ধরনের ঘোষণা দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের ইরানি হামলার প্রত্যুত্তরের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন। তবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা চালানোর পক্ষে তার সমর্থন নেই বলে জানিয়েছেন।


ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার প্রতিশোধ হিসেবে পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, বর্তমানে সাতটি ফ্রন্টে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গাজা ও পশ্চিম তীর ছাড়াও ইসরায়েলি বাহিনীকে ইরান ও লেবানন, ইয়েমেন, সিরিয়া ও ইরাকে থাকা ইরানি সমর্থিত গোষ্ঠীদের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে।

আইডিএফ জানায়, তারা উল্লেখযোগ্য হামলা চালাতে চায়, তবে হামলার ধরন কী হবে তা স্পষ্ট করেনি সংস্থাটি।  

এদিকে হামলা হলে ইসরায়েলকে আরও কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তেহরান। সিরিয়া সফররত ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানিয়েছেন, ইসরায়েল আগ্রাসন চালালে এবার আরও শক্তিশালী জবাব দেওয়া হবে।

শনিবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর যেকোনো আক্রমণের জন্য আমাদের প্রতিক্রিয়া সম্পূর্ণ পরিষ্কার। প্রতিটি হামলার জন্য ইরান থেকে অনুরূপ প্রতিক্রিয়া হবে। এমনকি আরও শক্তিশালী হবে। এসময় গাজা ও লেবাননে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

হামাসের সঙ্গে গত বছরের ৭ অক্টোবর সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ইসরায়েল। এই যুদ্ধের এক বছর না যেতেই লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গেও সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে তারা।  

ইসরাইল ওই হামলার ‘সময় ও সুযোগ মতো সমুচিৎ জবাব’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সেই লক্ষ্যেই দেশটির সামরিক বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে খবরে জানানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম পাবলিক ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন জানিয়েছে,‘সেনাবাহিনী ইরানের মিসাইল হামলার শক্তিশালী জবাবের পরিকল্পনা করছে। যদিও তাদের মিসাইল আমাদের বড় কোনো ক্ষতি করেনি। কিন্তু এই হামলার জবাব অবশ্যই দিতে হবে।’

ইরানের বিরুদ্ধে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোর সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করছে দখলদার ইসরাইল। ইরানে হামলার পরিকল্পনা ঠিক করতে চলতি সপ্তাহে ইসরাইলে যাওয়ার কথা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল মিখায়েল কুরিল্লার।

আলাদা প্রতিবেদনে হিব্রু ভাষার সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, ইসরায়েলে ইরানের বিরুদ্ধে হামলার যে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে, সেখানে ইরানের পাল্টা জবাবের বিষয়টিও মাথায় রাখা হচ্ছে।

অর্থাৎ ইরান আবারও মিসাইল ছুড়বে এমন বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই তারা হামলার ছক কষছে। হারেৎজ আরও জানিয়েছে, ইরানে হামলার প্রস্তুতি হিসেবে গাজায় ইসরাইলি সেনারা তাদের বর্বরতা বৃদ্ধি করছে।

ইয়েদিওথ নামে ইসরায়েলের আরেক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইরানের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা ঠিক করতে ইউরোপের কয়েকটি দেশের কর্মকর্তারা ইসরাইলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে তেল আবিবে বৈঠক করেছেন।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ