ধরুণ আজ আপনার বই পড়তে ভালো লাগছেনা, কিন্তু আগামীকালের পরীক্ষার পড়া অনেক। হাতে সময় খুব কম। কোনো ভাবে যদি অল্প সময়ে সম্পূর্ণ সিলেবাস শেষ করা যেতো! তখনি হঠাৎ বই এর উপর দেখলেন এনিমেশন, যেখানে পড়ার বিষয় এনিমেশন আকারে চলতে থাকবে কোনো ডিভাইস ছাড়াই।
আবার মনে করুন রাস্তা দিয়ে যাবার সময়ই আপনার স্মার্টফোনটি বিল্ডিংগুলোর দিকে তাক করাতেই সেগুলোর ট্যাগ ফোনে স্ক্রিনে উঠে বলে দিচ্ছে কোন বিল্ডিংটি কীসের আর সেটির কোনো বিখ্যাত ইতিহাস আছে কিনা। সাথে সাথে জেনে নিতে পারছেন আশেপাশে কোনো খাবার হোটেলের তথ্য। এই ধরণের সুবিধাই পাবেন অগমেন্টেড রিয়েলিটিতে।
অগমেন্টেড রিয়েলিটি হলো প্রযুক্তির একটি শাখা, যা বাস্তব জগতের বর্ধিত অনলাইন সংস্করণ। বাস্তবে যা দেখবেন, তার উপর কম্পিউটার নির্মিত একটি স্তর যুক্ত করে দেবে অগমেন্টেড রিয়েলিটি। তখন বাস্তব এবং ভার্চুয়ালের সংমিশ্রণে তৈরি হয় নতুন এক অনুভূতি। সব কিছুকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা।
অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) এমন এক প্রযুক্তি, যা বাস্তব জগতের সাথে ভার্চুয়াল উপাদান যুক্ত করে ব্যবহারকারীদের ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা দেয়। এতে কম্পিউটার-উৎপাদিত ছবি, শব্দ, ভিডিও এবং অন্যান্য সংবেদনশীল তথ্য বাস্তব পরিবেশের উপর লেয়ারিং হয়, যা ব্যবহারকারীদের বাস্তব এবং ভার্চুয়ালের সংমিশ্রণে এক জগৎ উপস্থাপন করে।
বাংলাদেশেও এআর প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন পণ্য ও সেবা উন্নয়নে কাজ করছে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও এআর প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তু জীবন্ত করে তুলে, যা তাদের শেখার অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করে। এআর প্রযুক্তি শিক্ষার্থীদের কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি এবং বিষয়বস্তু সহজে বুঝতে সহায়তা করে।
এছাড়াও, এআর প্রযুক্তি সাংবাদিকতায়ও ব্যবহৃত হচ্ছে। গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম নেটওয়ার্কের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সিরিয়ার মতো সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে সাংবাদিকরা এআর এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) ব্যবহার করে সংবাদ সংগ্রহ ও উপস্থাপন করছেন, যা দর্শকদের নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করছে।
বাংলাদেশে এআর প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। প্রযুক্তির এই অগ্রযাত্রা দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে, যা অর্থনীতি, শিক্ষা এবং বিনোদন ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সূত্র: গ্লোবাল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম ও দ্য ভার্জ
