তিন বছর আগে ইংল্যান্ডের সাসেক্সে ৬ বছরের এক বালক একটি পাথর খুঁজে পায়। বালকটি যে পাথরটি পেয়েছিল তা আসলে নিয়ান্ডারথাল যুগের একটি কুঠার। ৫০ হাজার বছর আগের মানুষ এই পাথরটিকে কুঠার হিসেবে ব্যবহার করতো।
ওয়ার্থিং থিয়েটার্স ও মিউজিয়ামের কিউরেটর জেমস সেনবারি লাইভ সায়েন্সকে জানান, পাথরটি নিয়ে বেন নামের একজনের মায়ের কাছ থেকে একটি ইমেইল পান। মেইল পাওয়ার পর বস্তুটি সাধারণ কিছু হবে বলে আশা করেননি।
কারণ হিসেবে তিনি জানান, সমুদ্র সৈকত থেকে কোনো বস্তু পেলেই অনেকে আমাকে ইমেইল করেন। তবে পাঠানো বস্তুগুলো নুড়ি পাথর ছাড়া অন্য কিছু হয় না। কিন্তু বেনের মায়ের ইমেইলের সাথে ছবিটা দেখার সাথে সাথে আমার মনে হলো, এটা নিয়ান্ডারথাল যুগের একটা হাতের কুঠার। এটি একেবারে অবিশ্বাস্য আবিষ্কার বলে জানান তিনি।

কুঠার পাথরটিও সাসেক্স সৈকতে কুড়িয়ে পায় বেন, ছবি: লাইভ সায়েন্স
নিয়ান্ডারথাল যুগের হাতের কুঠারগুলো তুলনামূলকভাবে ছোট হতো এবং দুই পাশই শক্ত। তাই এগুলোকে সহজেই শনাক্ত করা যায়৷ আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, সেন্সবারি নিদর্শনটিকে একটি মাউস্টেরিয়ান হাত কুড়াল হিসাবে চিহ্নিত করেন। যার অর্থ- এটি সেই নিয়ান্ডারথাল যুগের শেষ সময়ের। এরপর থেকে ইউরোপ ও ব্রিটেনে শুরু হয় দিনগণনা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কুঠারটি নিয়ান্ডারথাল যুগের শেষ প্রজন্মের। এটি সত্যিই সাসেক্সের জন্য বিরল ঘটনা। এই মিউজিয়ামের জন্য অনন্য উদাহরণ। কারণ নিয়ান্ডারথাল সময়ে জনসংখ্যার ঘনত্ব খুবই কম ছিল।
মূল্যবান এই প্রত্নতাত্ত্বিক পাথরটি গত মাসে ওয়ার্থিং থিয়েটার্স ও মিউজিয়ামে নিয়ে আসে বালক বেন ও তার পরিবার। মিউজিয়ামে নিয়ে আসার পর গবেষণা থেকে জানা যায়, এটি নিয়ান্ডারথাল যুগের বহুল ব্যবহৃত পাথরের কুঠার। বিজ্ঞানীরা বিস্মিত হন, কিভাবে দীর্ঘ সময় পানির নিচে থাকার পরও এই শিল্পকর্মটি নিরাপদ ও অক্ষত ছিল।

দীর্ঘ সময় পানির নিচে থাকার পরও এই শিল্পকর্মটি নিরাপদ ও অক্ষত ছিল, ছবি: লাইভ সায়েন্স
মূলত আট হাজার বছর আগে বন্যার কারণে উত্তর সাগরের তলদেশে থাকা বস্তুসমূহ উপরে উঠে আসে। বন্যায় কুঠার পাথরটিও সৈকতে পৌছায়, যা দীর্ঘ সময় পর কুড়িয়ে পায় বেন। পরে তার পরিবারের সাথে কথা বলে এটি এখন জাদুঘরে রাখা হয়েছে।
জিও টিভি ও লাইফ সায়েন্স থেকে অনুদিত