প্রজাপতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হই আমরা সবাই। এক ফুল থেকে আরেক ফুলে তাদের উড়ে বেড়ানো আমাদের মননকে আন্দোলিত করে। শুধু সৌন্দর্যেই নয়, ফুলের পরাগায়নে ভূমিকা রেখে প্রকৃতিতে বড় অবদান রেখে চলেছে এই প্রজাপতি। অথচ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে তাদের অস্তিত্বই আজ হুমকির মুখে। খবর সিএনএনে
নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে যে পৃথিবীর জলবায়ু যদি উষ্ণ হতে থাকে তবে তা হালকা রঙয়ের ও ছোটো প্রজাতির প্রজাপতির টিকে থাকার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ এ ধরনের লাইকেনিডি পরিবারের অন্তর্গত প্রজাতির বাতাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হয়। এ সংক্রান্ত গবেষণাটি জার্নাল অব অ্যানিমেল ইকোলজিতে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির গতি তুলনা করলে এসব প্রজাপতির টিকে থাকাটা কঠিন হয়ে যাবে। আর বাস্তুসংস্থানে এর কী প্রভাব পড়বে -তা বুঝতে আরও বিস্তর গবেষণা প্রয়োজন।
আপাতত গাঢ় রং ও অপেক্ষাকৃত বড় প্রজাপতির ক্ষেত্রে ঝুঁকি কম। এ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ডক্টরাল ছাত্র এসমে অ্যাশে-জেপসন বলেছেন, ‘গাঢ় ডানাওয়ালা প্রজাপতিগুলো পুরো গবেষণায় ধারাবাহিকভাবে ভালো ফল করেছে।’
গবেষণায় আরও বেরিয়ে এসেছে প্রজাপতির ডানার রঙ প্রাণিটিকে ঠাণ্ডা রাখতে ভূমিকা পালন করে। প্রজাপতির টিকে থাকার জন্য সূর্যের থেকে প্রাপ্ত উষ্ণতা তার প্রয়োজন। কিন্তু তাপমাত্রা যখন বৃদ্ধি পায়, পরিবেশের সঙ্গে শরীরের তাপমাত্রার সামঞ্জস্য বজায় রাখতে তাপ সহনশীলতার কৌশলের আশ্রয় নেয় প্রজাপতি। এই পতঙ্গটির ক্ষেত্রে যা থার্মাল বাফারিং নামে পরিচিত।
এখন গবেষণায় দেখা গেছে থার্মাল বাফারিং-এ অপেক্ষাকৃত বড় প্রজাতির ডানা বেশি তাপ শোষণ করে শরীরকে শীতল রাখতে পারে। এ ছাড়া যদি শীতলতম কোনো স্থানেও যাওয়ার প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রেও ছোটো-পাখাওয়ালা প্রজাপতির চেয়ে দ্রুত শীতল এলাকায় চলে যেতে পারে।

থার্মাল বাফারিংয়ের পরীক্ষার জন্য গবেষকরা ৬টি প্রজাপতি পরিবারের ৫৪টি প্রজাতির প্রতিনিধিত্বকারী ১ হাজার ৩৩৪টি প্রজাপতিকে ধরা হয় এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে কাঁচের জারে আটকে রেখে তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের শরীরের তাপমাত্রার পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা হয়।
এ ছাড়া পোকামাকড়ের ক্ষেত্রে দ্রুত উড়ে গেলে তাদের শরীরের তাপমাত্রা পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে গবেষকরা প্রজাপতিকে তাড়া না করে ধরার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছে।