বাংলা ভাষায় “লেখাপড়া” ও “পড়ালেখা”—এই দুটি শব্দ প্রায়শই ব্যবহার করা হয়, কিন্তু কীভাবে এগুলো আলাদা এবং কোনটি সঠিক? আজকের আলোচনায় আমরা শব্দগুলোর মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য, ব্যবহারিক গুরুত্ব এবং আমাদের ভাষার সৌন্দর্য তুলে ধরবো। আসুন জানি, কোনটি আমাদের ভাষায় অধিক উপযুক্ত এবং কেন।
লেখা’ আগে; আর ‘পড়া’ পরে ব্যবহার করাটাই যথোপযুক্ত মনে হচ্ছে। “লেখাপড়া” এখানে সিকোয়েন্স মেইনটেইন করে। কিন্তু ফ্রেজ হিসবে “পড়ালেখা” বলাটাও ভুল নয়৷ দুটিই ব্যবহৃত হয় এবং দুটিই সঠিক।
মানুষ লিখতে শুরু করে চার হাজার বছর আগে থেকে। এরপর থেকেই পড়ার মত এবিলিটি গড়ে উঠে। মানুষ আগে থেকে নানারকম শব্দ করতে পারত নিজেদের ভাবের বহিঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে। তবে সেগুলো পড়া ছিল না৷ পড়া হলো কোনো সিম্বল ইন্টারপ্রেট করার ক্ষমতা।
লেখা না থাকলে তো আর পড়া সম্ভব নয়৷ তাই শুরুতে মানুষ সিম্বল ব্যবহার করা শুরু করল এবং সেগুলোর জন্য ইউনিক সাউন্ড বের করা শুরু করল। সেখান থেকেই নানারকম ভাষা আবিষ্কার হয়েছে। পরবর্তীতে ভাষার স্ট্রাকচার কাজে লাগিয়ে মানুষ পড়তে শেখা শুরু করল।
তাই ‘লেখা’ আগে; আর ‘পড়া’ পরে ব্যবহার করাটাই যথোপযুক্ত মনে হচ্ছে। “লেখাপড়া” এখানে সিকোয়েন্স মেইনটেইন করে। কিন্তু Phrase হিসবে “পড়ালেখা” বলাটাও ভুল নয়৷ দুটিই ব্যবহৃত হয় এবং দুটিই সঠিক।

আবার কারো কারো মোতে “লেখা-পড়া” এবং “পড়া-লেখা” শব্দ দুটি সঠিক হলেও “লেখা-পড়া” শব্দটি বেশি ব্যবহৃত হয়।
“লেখা-পড়া” শব্দটি “লেখা” এবং “পড়া” দুটি শব্দের সমষ্টি। “লেখা” শব্দের অর্থ হলো লিখন, লিখিত বস্তু, লেখনশৈলী, লেখাপড়া, লেখক ইত্যাদি। “পড়া” শব্দের অর্থ হলো পাঠ, পঠন, পাঠ্য, পাঠ্যপুস্তক, পাঠশালা ইত্যাদি।
“লেখা-পড়া” শব্দটি সাধারণত শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ হলো পড়া এবং লেখা শেখানো বা শেখার কাজ। যেমন, “আমি আমার সন্তানকে লেখা-পড়া শেখাতে চাই।”
“পড়া-লেখা” শব্দটিও “লেখা” এবং “পড়া” দুটি শব্দের সমষ্টি। তবে, এই শব্দটি “লেখা-পড়া” শব্দের চেয়ে কম ব্যবহৃত হয়।
“পড়া-লেখা” শব্দটি সাধারণত পড়া এবং লেখার সমষ্টিগত ক্রিয়াকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। যেমন, “আমি পড়া-লেখার জন্য অনেক সময় দিই।”
উভয় শব্দই সঠিক হলেও, “লেখা-পড়া” শব্দটি বেশি ব্যবহৃত হওয়ায় তা বেশি শুদ্ধ বলে মনে করা হয়।