দেড় মাস পর আবারও দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার কারণে রিজার্ভের পরিমাণ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ গণনার মান অনুযায়ী রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। উল্লেখ্য, নিট রিজার্ভ গণনা করা হয় আইএমএফ’র বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুসারে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদী দায় বিয়োগ করলে, নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বিদেশি মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৪৯৮ কোটি ৫৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দেশে মোট রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের পরামর্শে বিপিএম-৬ হিসাবে তা ছিল ১৯ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার।
মূলত রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে রিজার্ভ বেড়েছে। চলতি মাস ডিসেম্বরের ২১ দিনে ২ বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত বছরের ডিসেম্বরের পুরো মাসের চেয়ে বেশি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ডলার।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাজারের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখায় বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল ছিল। বিশেষ করে ডলারের দাম ১২০ টাকায় ছিল। যদিও গত দুই দিনে ফের বেড়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রাখে। বিপরীতে রেমিট্যান্স প্রবাহও বাড়তে থাকে। যা রিজার্ভ বাড়ায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ডলারপ্রতি ১২০ টাকার মূল্য নির্ধারণ ও বাজার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৯ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে স্থিতিশীল ছিল।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমদানি বৃদ্ধির কারণে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে। ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্সের ডলার কিনতে সর্বোচ্চ ১২৭.৭০ টাকা খরচ করতে হয়েছে।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি থাকায় ডলারের পরিমাণ বেড়ে যায়। এটি ব্যাংকগুলোর নতুন এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার সীমাবদ্ধতা শিথিল করতে সহায়তা করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আমদানিতে ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যেখানে গত অর্থবছরে এ প্রবৃদ্ধি ছিল নেগেটিভ (ঋণাত্মক) ১০ শতাংশ।
একই সময়ে, রেমিট্যান্স ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায় আর রপ্তানি বেড়েছে ৮ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের গতি আরও বেড়েছে।