Home বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা না করে শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার: মির্জা ফখরুল

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা না করে শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার: মির্জা ফখরুল

হ্যালো বাংলাদেশ ডেস্ক
৭৫ views

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ তাদের দুর্নীতি, লুটপাটের কারণে কার্যত অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বর্তমান সরকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা না করে চলতি বছরের মাঝপথে ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা জনগণের ওপর চরম চাপ বাড়াবে।’

শনিবার সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার চলমান অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা তথা উচ্চ মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা না করেই ১০০টিরও বেশি পণ্যের ওপর ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছে। কিছু পণ্যের কর অব্যাহতি তুলে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য, পোশাক, ওষুধ এবং মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। এই সিদ্ধান্তটি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে, বিশেষ করে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর ওপর নেতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলবে, চাপ বাড়াবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে তারা চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘাটতির প্রথম ধাপের ৪২ হাজার কোটি টাকা এবং পরবর্তী সম্ভাব্য ঘাটতি মেটাতে এবং আইএমএফ এর ঋণের জন্য এই ভ্যাট বাড়িয়েছে, কারণ বর্তমান রাজস্ব দিয়ে সরকার বাজেটের খরচ মেটাতে পারছে না। উধ্বগতির দ্রব্যমূল্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা না করে একইভাবে, কিছুদিন পূর্বে সরকার ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাপিয়েছে কিছু লুন্ঠিত ব্যাংকের তারল্য সংকট মোকাবেলায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসীবাদের পরবর্তী সময়ে অন্যান্য খাতের মতো আর্থিক খাতেও বিশৃঙ্খলা ও ভঙ্গুর অবস্থা পরবর্তী চ্যালেঞ্জগুলো সৃষ্টি করেছে। তথাপি, বিএনপি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ জনগণের জীবনের ওপর প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। পতিত আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছর দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে কার্যত ধ্বংস করে ফেলেছে। ডিসেম্বর ২০২৪ অনুযায়ী, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারে নেমে গিয়েছে, দেশের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১%, অনেক ক্ষেত্রে এটি ২৫% এরও বেশি বেড়েছে। অথচ দক্ষিণ এশিয়া বিশেষত শ্রীলংকার মত দেশে মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য হারে করেছে। দেশের মোট ঋণের পরিমাণ ২০ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে (চিত্র ০১) এবং ব্যাংকিং খাতের তারল্য সংকটের কারণে জনগণ তাদের কষ্টার্জিত আমানত ফেরত পাচ্ছে না। দেশের অর্থনীতি কার্যত ভেঙে পড়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এমন বাস্তবতায় দেশের অর্থনীতিকে স্বাভাবিক ও গতিশীল অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া অব্যশই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দেশের শাসন ব্যবস্থায় যেই থাকুক না কেন, তাকেই সেই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে এবং যোগ্যতা ও সাহসের সঙ্গে তা মোকাবেলা করতে হবে। কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এই চ্যালেঞ্জগুলোকে কার্যকর উপায়ে মোকাবেলা না করে এবং একটি অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের ভিত্তি তৈরির দিকে মনোযোগ না দিয়ে চলতি অর্থ বছরের মাঝপথে হঠাৎ করে ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধি করল, যা সহজ কিন্তু জনগণের জন্য কল্যাণকর নয়। জনজীবন সহজ করতে শুল্ক বৃদ্ধির আগেও অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার তার মেয়াদের শুরুতে বলেছিল, দেশের অর্থনীতির কোন অবস্থাতেই টাকা ছাপানো হবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের ন্যায় টাকা ছাপানোর মতো অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর পদক্ষেপটি গ্রহণ করল, যা দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এবং জনগণের নাভিশ্বাসকে বাড়িয়ে দিয়েছে।’

বাজারমূল্য বেড়ে যাওয়ায় অস্বাভাবিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিএনপি মহাসচিব সরকারকে এ দিকেই নজর দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

আরও যা পড়তে পারেন

কমেন্ট করুণ